মুম্বই: যৌন নির্যাতন নিয়ে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের রায়। বেঞ্চ জানিয়েছে, জোর করে কোনও মেয়ের হাত ধরলে বা প্রকাশ্যে প্যান্টের চেন খুললে তা যৌন নিগ্রহের মধ্যে পড়ে না। বিচারপতি জানিয়েছেন ২০১২ সালের পকসো আইনের আওতায় এই  রায়।


পাঁচ বছরের এক শিশুকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে ৫০ বছর বয়সি এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার পর আদালতের দ্বারস্থ হয় ওই শিশুর পরিবার। সেই ঘটনার পরিপেক্ষিতে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৫ বছরের কারাদণ্ড দিলেও বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গান্ডিওয়ালা আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে ওই অভিমত জানিয়েছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এবং ৩৪২ নম্বর ধারা অনুযায়ী ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে দোষী ঘোষিত অভিযুক্তকে।


বিচারপতি পুষ্পা গান্ডিওয়ালা বলেন, জোর করে কোনও মেয়ের হাত ধরা যৌন নির্যাতনের মধ্যে পড়ে না। প্যান্টের জিপ খুলে রাখা অথবা যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করাও যৌন নির্যাতনের পড়ে না। বেঞ্চ জানিয়েছে, ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৫৪ ধারায় যৌন হেনস্থার বিষয়টি পড়ে, কিন্তু যৌন নির্যাতন নয়। কারণ, সরাসরি শরীরী সংস্পর্শ হয়নি।


বারবার বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের রায়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য দিনকয়েক আগে একটি পৃথক ঘটনায় বিচারপতি গান্ডিওয়ালা বলেন, ত্বকের সঙ্গে সংস্পর্শ না হলে তা যৌন নির্যাতন বলে বিবেচিত হবে না। সম্প্রতি এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১২ বছরের এক নাবালিকার বুকে স্পর্শ করা এবং চাপ দেওয়া সহ তার জামা কাপড় খোলার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় আদালতের দ্বারস্থ হয় ওই নাবালিকার পরিবার। তার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই রায় দেয়। বিচারপতি জানান, পোশাক খুললে বা পোশাকের ভেতর দিয়ে আপত্তিজনকভাবে হাত দিলে তবেই সেটা যৌন নির্যাতন। ত্বকের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ না হলে তা যৌন নির্যাতন বলা যাবে না। তিনি আরও বলেছেন, যৌন নির্যাতন হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার জন্য পেনিট্রেশন বা শিশুর শরীরে অঙ্গ প্রবেশ হতেই হবে তা নয়। যে কোনও ধরনের যৌন স্পর্শই অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু তা পোশাকের উপর দিয়ে হলে চলবে না বলে জানান বিচারপতি।


তবে গতকাল এই রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ গতকাল জানান, অভিযুক্তকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ স্থগিত রেখে তাকে ও মহারাষ্ট সরকারকে সংশ্লিষ্ট মামলায় নোটিস দিয়েছে। দু সপ্তাহে তাদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে।