ওয়াশিংটন: ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস হাতছাড়া হচ্ছে, বুঝতে পেরে রাস্তায় নেমে পড়লেন তাঁর সমর্থক, অনুরাগীরা? অ্যারিজোনার এক ভোটকেন্দ্রের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বুধবার রাতে অসমর্থিত সূত্রে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রিপাবলিক্যান প্রেসিডেন্টের পক্ষে পড়া ভোট ইচ্ছা করে গোনা হচ্ছে না। সঙ্গে সঙ্গে আসরে নামেন তাঁরা। ফিনিক্সে মেরিকোপা কাউন্ট নির্বাচনী দপ্তরের সামনে জড়ো হয় স্লোগান দিতে থাকেন, চুরি বন্ধ হোক, আমার ভোট গুনতে হবে। বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশেরই মুখে ছিল না মাস্ক। কারও কারও হাতে আবার হ্যান্ডগান, রিভলভার। গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠা এই রাজ্যে ডেমোক্র্য়াট প্রার্থী জো বাইডেন সামান্য লিড নিয়েছিলেন তখন। কয়েকটি মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের দাবি, অ্যারিজোনা বাইডেনের দখলে, যদিও ট্রাম্পের প্রচার শিবির তা খারিজ করে তারা এখনও লড়াইয়ে আছে বলে জানায়। অ্যারিজোনা জিততে পারলে ডেমোক্র্যাটদের ঝুলিতে যাবে হোয়াইট হাউস দখলের অভিযানে অতি গুরুত্বপূর্ণ ১১টি ইলেকটোরাল ভোট। ট্রাম্পের পুনর্বার জয়ের আশা কমবে। ২০১৬-য় অ্যারিজোনা জিতেছিল রিপাবলিক্যানরা।
ভোটের রাতেই ফক্স নিউজ, এপি অ্যারিজোনা বিডেন পেয়েছেন বলে জানায়, যদিও তখন মোট ভোটের ৭০ শতাংশের সামান্য কিছু বেশি গোনা হয়েছে। এতেই ক্ষেপে গিয়ে ট্রাম্প ও তাঁর অনুগামীরা নেমে পড়েন। প্রায় ২০০ ট্রাম্প সমর্থক শেম অন ফক্স ধ্বনি দিতে থাকে। কেউ কেউ বলে, তারা মাইক সারনোভিচ নামে এক দক্ষিণপন্থী কর্মীর ট্যুইট দেখে চলে এসেছে। কোনও কোনও ট্রাম্প সমর্থককে বলতে শোনা যায়, সব ভোট নিয়ম মেনে, নীতি অনুযায়ী গুনতে হবে। ফেসবুকে মঙ্গলবার রাতে গুজব ছড়ায়, মেরিকোপার কিছু ভোট গোনা হচ্ছে না ভোটাররা বিশেষ এক ধরনের পেন ব্য়বহার করেছেন বলে। স্থানীয় ভোটকর্মীরা যদিও তা অস্বীকার করেন।
এখনও কয়েকটি প্রদেশে ভোটগণনা চলার মধ্যেই ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটরা কোনও প্রমাণ না দিয়ে ছল-ছুতোয় ভোট চুরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলে একাধিক রাজ্যে ভোটগণনা সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন। বুধবার দুপুরে ডেট্রয়েট শহরতলিতেও বিক্ষোভ হয়। ভোট জালিয়াতি চলছে বলে অসমর্থিত সূত্রে করা দাবির ভিত্তিতে প্রায় ৩০ জন, যাদের বেশিরভাগই রিপাবলিকান, একটি গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে গেলে আটকে দেন ভোটকর্মীরা। মিশিগানেও ভোটগণনা বন্ধ রাখতে চেয়ে মামলা করেন ট্রাম্প, যা ছেলেমানুষি আখ্যা দেন বিদেশসচিব।
বিক্ষোভকারীরা ২০০০ সালে ফ্লোরিডায় ফের গণনার সময় ঘটে যাওয়া ‘ব্রুকস ব্রাদার রায়ট’-এর প্রতিধ্বনি করে। সেবার ডেমোক্র্যাট প্রভাবিত এক ডিস্ট্রিক্টের একটি বাড়িতে ব্য়ালট গুনছিলেন একদল ভোটকর্মী। গায়ে ব্লেজার চাপানো একদল রিপাবলিকান সমর্থক সেখানে আচমকা ঢুকে পড়ে গণনা বন্ধ করতে বাধ্য করে। শেষ পর্যন্ত ফ্লোরিডায় জিতে প্রেসিডেন্ট পদ পান রিপাবলিক্যান জর্জ ডব্লু বুশ।