নয়াদিল্লি: আমেরিকায় ভারতীয় অভিবাসীদের উদ্বেগ বাড়ল ফের। এতদিন আপনা আপনি ওয়র্ক পারমিটের পুনর্নবীকরণ হয়ে গেলেও, এখন থেকে আর তা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিল ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। এতে কর্মসূত্রে আমেরিকায় থাকা বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা সমস্যায় পড়তে চলেছেন। বিশেষ করে ভারতীয় অভিবাসীরা মুশকিলে পড়বেন। কারণ আমেরিকার অভিবাসী কর্মীদের একটা বড় অংশই ভারতীয়, যাঁরা প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে যুক্ত। (US Ends Automatic Work Permit Renewal)
ট্রাম্প সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিওরিটি জানিয়েছে, এখন থেকে আর পরিযায়ী শ্রমিকদের আপনা আপনি Employment Authorisation Documents-এর পুনর্নবীকরণ হবে না। অভিবাসীদের ‘এলিয়েন’ বলে উল্লেখ করে ট্রাম্প সরকার। সেই মর্মে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘৩০ অক্টোবরের পর যাঁরা EAD পুনর্নবীকরণের আবেদন জমা দিয়েছেন, আর আপনা আপনি তাঁদের EAD-র পুনর্নবীকরণ হবে না’। তবে ৩০ অক্টোবরের আগে যাঁদের আপনা আপনি পুনর্নবীকরণ হয়ে গিয়েছে, তাঁদের উপর প্রভাব পড়বে না কোনও। (Donald Trump)
ট্রাম্প সরকারের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনসুরক্ষাকে মাথায় রেখেই এই ঝাড়াই বাছাই। অথচ জো বাইডেনের আমলে অভিবাসীদের নিয়ম ছিল, ওয়র্ক পারমিটের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও, আমেরিকায় ৫৪০ দিন কাজ করতে পারবে অভিবাসীরা। অর্থাৎ আমেরিকার নাগরিক না হয়েও সেখানে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল অভিবাসীদের। সেই মর্মে আইনি সুরক্ষা পেতেন তাঁরা।
ট্রাম্প সরকার জানিয়েছে, ঘন ঘন অভিবাসীদের ব্যাকগ্রাউন্ড খতিয়ে দেখার পক্ষপাতী তারা, যা জালিয়াতি রুখতে সাহায্য় করবে তাদের। পাশাপাশি, অসৎ উদ্দেশ্য থাকলে, তাও ধরা পড়বে। Temporary Protected Status-এর আওতায় যাঁরা বিশেষ সুবিধা পান, আইনত যাঁদের ওয়র্ক পারমিটের মেয়াদবৃদ্ধির নিদান রয়েছে, তাঁদের উপর এই নীতি কার্যকর হবে না।
আমেরিকার নাগরিকত্ব এবং অভিবাসী বিভাগের ডিরেক্টর জোসেফ এডলোর মতে, “আমেরিকায় কাজের সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়, কিন্তু তা মোটেই অধিকার নয়।” স্বাভাবিক ভাবেই নয়া নীতি কার্যকর করতে হচ্ছে তাঁদের। ওয়র্ক পারমিটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার অন্তত ১৮০ দিন আগে পুনর্নবীকরণের আবেদন জানানো উচিত বলে অভিবাসীদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “এলিয়েনরা EAD পুনর্নবীকরণে যত দেরি করবেন, তাতে সাময়িক ভাবে তা বাতিলই হয়ে যেতে পারে।”
যে সমস্ত অভিবাসী আমেরিকায় অস্থায়ী ভাবে, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কর্মরত, তাঁরা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। বিশেষ করে যাঁরা H-1B বা স্পনসর্ড ভিসা নিয়ে কাজ করতে গিয়েছেন। ওয়র্ক পারমিটের পুনর্নবীকরণ না হয়ে থাকলে, চাকরি হারাতে হবে তাঁদের। সেই নিয়ে বিস্তর ঝামেলা পোহাতে হবে। আমেরিকার নাগরিক না হয়েও, সেদেশে কাজ করার জন্য EAD-র প্রয়োজন পড়ে। যাঁরা আমেরিকার স্থায়ী বাসিন্দা, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর নয়। অভিবাসী নন, এমন ব্যক্তিদেরও EAD-র প্রয়োজন নেই।
অন্য দিকে, H-1B ভিসার খরচও বেড়ে গিয়েছে। ট্রাম্প সরকার একধাক্কায় তা বাড়িয়ে ১ লক্ষ ডলার করে দিয়েছে, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত অভিবাসীরা বিপাকে পড়েছেন।