ওয়াশিংটন: গত সপ্তাহে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় ফৌজের ওপর বর্বরোচিত হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন চিনা সামরিক বাহিনীর এক শীর্ষস্থানীয় জেনারেল! এমনটাই দাবি করা হয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে।


ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের প্রধান জেনারেল ঝাও জংকি এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত কয়েকজন প্রবীণ সামরিক কর্তা ওই হামলার সবুজ সঙ্কেত দেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, অতীতে ঝাও-এর নেতৃত্বে ভারতের সঙ্গে অতীতে সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছিল চিনা বাহিনী।


ঝাও এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, চিনের উচিত নয় নিজেদের দুর্বল করে দেখানোটা। কারণ তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা তার শরিক রাষ্ট্রগুলি চিনকে শোষণ করার সুযোগ পেয়ে যাবে। মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টের দাবি, ঝাও নিশ্চিত করেন, সীমান্ত সংঘাত যাতে অন্তত এক সপ্তাহ ধরে চলে। কারণ, তাঁর যুক্তি ছিল, এতে ভারতকে শায়েস্তা করা যাবে।


গালওয়ান প্রসঙ্গে চিন জানায়, স্থানীয় স্তরে পরিস্থিতি আচমকা উত্তপ্ত হওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলস্বরূপ, সেখানে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। কিন্তু, মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টের দাবি, গোটাটাই পূর্ব-পরিকল্পিত। ওই রিপোর্টের দাবি, নয়াদিল্লিকে নিজেদের শক্তি জাহির করার চেষ্টা করছিল বেজিং। যে কারণে, বেশ কিছুদিন ধরেই অত্য়ন্ত ঠান্ডা মাথায় সুপরিকল্পিতভাবে এই হামলার ছক করা হয়।


যদিও, ওই পরিকল্পনা ঠিকমতো কাজ করেনি। উল্টে তা বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে বলে দাবি করা হয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে। ওই ঘটনার ফলে, ভারত জুড়ে চিন-বিরোধী আক্রোশ তৈরি হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টের দাবি, চিনের উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে যে কোনও দরাদরির সময় ভারতকে বাধ্য করা তাদের শর্তে রাজি হতে। যেমন, বিতর্কিত এলাকা ইস্যু। কিন্তু, বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তার বিপরীত।


দেশে ৫জি নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য চিনা সংস্থা হুয়েই-কে বরাত দিয়েছিল ভারত। কিন্তু, ১৪ জুনের ঘটনার পর তা বাতিল করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, চিনা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটক ও চিনা মোবাইল ফোনের ব্যবহার বাতিলের ডাক দিয়েছেন ভারতীয়রা। এটা চিনের পরাজয়। সেদেশের সেনার পরাজয়।


মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় সেনার ওপর হামলার এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নিজে কতটা জড়িত ছিলেন, তা সম্পষ্ট না হলেও, তবে একটা আভাস মিলেছে যে তিনি ওই নির্দেশের কথা জানতেন।