নয়াদিল্লি: শ্রীলঙ্কায় আদানিদের বন্দরে মোটা টাকা বিনিয়োগ আমেরিকার। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় যে বন্দর গড়ে তুলছেন শিল্পপতি গৌতম আদানি (Gautam Adani), তার টার্মিনাল তৈরিতে ৫৫ কোটি ৩০ লক্ষ ডলার বিনিয়োদ করছে আমেরিকা। দক্ষিণ এশিয়ায় চিনা আধিপত্য বিস্তারের পথে অন্তরায় তৈরি করতেই এই বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। (Adani Group)


অর্থনৈতিক সঙ্কটে জেরবার শ্রীলঙ্কা, গত বছর পর্যন্ত প্রচুর টাকা ঋণ নিয়েছে চিনের কাছ থেকে। বন্দর থেকে সড়ক নির্মাণেও সেখানে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে চিন। কিন্তু গত বছর দেশ জুড়ে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। সেখানে বন্দর তৈরির বরাত পেয়েছে আদানি গোষ্ঠী। এবার তাতে যোগদন করল আমেরিকা সরকারের ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ফাইনান্স কর্প। (Sri Lanka Port)


আরও একটি দিক থেকে আমেরিকার এই বিনিয়োগ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আমেরিকার অর্থনৈতিক বিনিয়োগ সংক্রান্ত অনুসন্ধানী সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানিদের বিরুদ্ধে শেয়ার বাজারের দরে হেরফের ঘটানো থেকে জালিয়াতি এবং দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল। শ্রীলঙ্কায়র বন্দরে আমেরিকার বিনিয়োগে কিছুটা হলেও আদানিদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।


আরও পড়ুন: Nuclear Gravity Bomb: হিরোশিমা-নাগাসাকি তুচ্ছ, মাধ্যাকর্ষণ শক্তিচালিত পরমাণু বোমা তৈরির পথে আমেরিকা


কলম্বোয় গভীর জলে ওয়েস্ট কন্টেনার টার্মিনালে এই বিনিয়োগ, গোটা এশিয়ায় পরিকাঠামো ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত বৃহত্তম বিনিয়োগ আমেরিকার। এই বন্দর তৈরি হলে, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ফের গতি পাবে একদিকে, তেমনই ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্য সম্পর্কও আরও উন্নত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।


আমেরিকা জানিয়েছে, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উন্নয়নমমূলক কার্যে যোগদান বাড়াতেই শ্রীলঙ্কার বন্দরে এই বিনিয়োগ। সবমিলিয়ে ২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় ৯৩০ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে। গত বছরের শেষ নাগাদ সেখানে চিনের মোট বিনিয়োগ ছিল ২২০ কোটি ডলার। এখনও পর্যন্ত কোনও দেশ এত বিনিয়োগ করেনি শ্রীলঙ্কায়। যদিও চিনা বিনিয়োগে তৈরি হামবানতোতা বন্দর নিয়ে গোড়া থেকেই প্রশ্ন তুবে আসছে আমেরিকা। বন্দরটির গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি, ওই বন্দরের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কাকে চিন ঋণের নাগপাশে বেঁধে ফেলতে চাইছে বলে অভিযোগ তাদের।


তার পরই কলম্বোর এই বন্দরে বিনিয়োগ আমেরিকার। ভারত মহাসাগরে কলম্বোর বন্দরটি অন্যতম ব্যস্ত বন্দর। আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের রুটেই পড়ে সেটি। যত আন্তর্জাতিক জাহাজ ভারত মহাসাগরের উপর দিয়ে চলাচল করে, তার অর্ধেককে ওই বন্দর পেরোতে হয়।