নয়াদিল্লি : G20 সম্মেলনে (G20 Summit) যোগ দিতে ৭-১০ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে আসছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডো বাইডেন (US President Joe Biden)। G20-র অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে বিশ্বের একাধিক সমস্যা নিয়ে তিনি আলোচনা করবেন। সেই তালিকায় জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক ও সমাজিক প্রভাব কমানো, দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মতো বহুমাত্রিক ব্যাঙ্কের ক্ষমতা বাড়ানো-সহ বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। সফরকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জি-২০-তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) নেতৃত্বের কথাও তুলে ধরতে পারেন।


২০২২-র পয়লা ডিসেম্বর থেকে ২০২৩-এর ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরের জন্য G20-তে সভাপতিত্বের দায়িত্বে রয়েছে ভারত। তারপর থেকে দেশজুড়ে একাধিক মিটিং হয়েছে। এবছর জুন মাসে মোদির আমেরিকা সফরের সময়, বাইডেন বলেছিলেন, তিনি সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে জি২০ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। ভারত ও আমেরিকার এক যৌথ বিবৃতিতে বাইডেনের তরফে G20-তে নয়াদিল্লির নেতৃত্বের প্রশাংসাও করা হয়।


দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত আমেরিকার অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট ডোলান্ড লু-ও জি২০ উপলক্ষে বাইডেনের ভারত-সফরের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় বছর হতে চলেছে। জি-২০ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারত এবং আমেরিকা আয়োজন করছে APEC, অন্যদিকে জাপান G7। আমাদের অনেক QUAD সদস্যই রয়েছে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং এর ফলে দেশগুলি সব এক জায়গায় আসবে।" এর আগে জি-২০ভুক্ত দেশগুলির বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে ভারত সফরে এসেছিলেন আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেন।    


জুন মাসে মোদির আমেরিকা সফর নিয়ে চরম উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল। ২২ জুন মার্কিন কংগ্রেসে যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য পেশ করেন মোদি। সেখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ভাষণ দেন নমো। তিনি বলেছিলেন, 'গত কয়েক বছরে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অনেক অ্যাডভান্স হয়েছে। একাধিক প্রযুক্তি যোগ হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই AI এর আরেকটি অর্থ হল- America and India।' মোদির এই ভাষণের পর করতালিতে মুখরিত হয়েছিল মার্কিন কংগ্রেসের সভাঘর। সেই বক্তব্য এতটাই জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল যে মোদির ভাষণের এই উক্তিই টি-শার্টে লিখে মোদিকে উপহার দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মাইক্রোসফট সিইও সত্য নাদেলা, গুগল সিইও সুন্দর পিচাই, নাসার মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়মস, মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিসের চেয়ারম্যান এবং এমডি মুকেশ আম্বানি-সহ বিশিষ্টরা। 


মোদির আমেরিকা সফর নিয়ে মার্কিন দেশেও ছিল উত্তেজনা তুঙ্গে। মোদিকে কার্যত ঘিরে ধরতে দেখা যায় আমেরিকার সাংসদদের। কেউ করমর্দন করেন, কেউ হাত নাড়ান। কেউ এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরেন মোদিকে। সবার সঙ্গেই হাসিমুখে আলাপচারিতা করতে দেখা যায় মোদিকে। শুধু তাই নয়, সই-শিকারি মার্কিন সাংসদদের আবদারও মেটান মোদি। কেউ নোটবই দিয়ে অটোগ্রাফ চেয়েছেন। কেউ আবার মোদির সঙ্গে সেলফি তোলেন।