নয়াদিল্লি: ধর্মীয় স্বাধীনতার নিরিখে ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল আমেরিকা (US Religious Freedom Report)। ধর্মীয় হিংসা, হানাহানির জন্য সরাসরি সরকারের দিকে আঙুল তোলা হল। চিন, রাশিয়া এবং সৌদি আরবের সঙ্গে এক সারিতে রাখা হয়েছে ভারতকে। বলা হয়েছে, এখনও অনেক দেশ রয়েছে, যেখানকার সরকার ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে লাগাতার নিশানা করে চলেছে (Religious Freedom)।
প্রতি বছর আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা রিপোর্ট প্রকাশ করে আমেরিকা
পৃথিবীর কোন দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার রক্ষা হচ্ছে এবং কোথায় তার লঙ্ঘন হচ্ছে, তা নিয়ে প্রতি বছর আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা রিপোর্ট প্রকাশ করে আমেরিকা। এ বার তার প্রকাশ করলেন আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। পরে তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিভাগের অ্যাম্বাসাডর অফ চার্জ রশদ হুসেন। তিনি বলেন, "এখনও অনেক দেশের সরকারই নিজেদের সীমানার মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাসের মানুষকে নিশানা করে চলেছে।"
মোট ২০০টি দেশ এবং অঞ্চলকে নিয়ে এই রিপোর্ট তৈরি হয়। একেবারে খাতায়-কলমে, সমীক্ষা থেকে যে রিপোর্ট উঠে আসে, তার ভিত্তিতেই এই রিপোর্ট তৈরি করা হয় বলে জানিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। তিনি জানিয়েছেন, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ধর্মবিশ্বাসের স্বাধীনতা যেখানে খর্ব হচ্ছে, ত তুলে ধরাই তাঁদের লক্ষ্য, যাতে স্বাধীনতার প্রাপ্তি ঘটে।
নিজের বক্তব্যে সরাসরি যদিও ভারতের নাম মুখে আনেননি ব্লিঙ্কেন। তবে রিপোর্টে ভারতের উল্লেখ রয়েছে। তবে এই প্রথম নয়, গত কয়েক বছর ধরেই ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার রক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে আমেরিকা। হুসেন জানিয়েছেন, হরিদ্বারে মুসলিমদের উদ্দেশে ঘৃণাভাষণের ঘটনাও জানতে পেরেছেন তাঁরা। মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এখনও কী আচরণ চলছে, সে খবরও রয়েছে তাঁদের কাছে। রাশিয়াকে দিয়ে শুরু হয়েছে তালিকা, যাতে আফগানিস্তানও রয়েছে।
ভারতের তরফে যদিও এই রিপোর্ট খারিজ করা হয়েছে
ভারতের বিষয়ে বলা হয়েছে, গত এক বছরে ভারতে বিশেষ ধর্মের মানুষের বিরুদ্ধে একাধিক হিংসাত্মক ঘটনা সামনে এসেছে। গুজরাতে নবরাত্রির অনুষ্ঠানে যাওয়ার অপরাধে মুসলিম যুবকদের বেত মারা থেকে মধ্যপ্রদেশে মুসলিমদের বাড়িতে বুলডোজার চালানো, এমনকি খারগনে সাম্প্রদায়িক হিংসার পর মুসলিমদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার উল্লেখও রয়েছে।
ভারতের তরফে যদিও এই রিপোর্ট খারিজ করা হয়েছে। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানিয়েছেন, ওই রিপোর্টে ভুল তথ্য রয়েছে। ভারতের প্রতি বৈরিতাই প্রতিফলিত হয়েছে তাতে। তবে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তোলার পক্ষপাতী দিল্লি, সে কথাও জানিয়েছেন তিনি।