নয়াদিল্লি: উত্তরপ্রদেশে নিষিদ্ধ হালাল শংসাপত্র খাদ্যপণ্য এবং অন্যান্য সামগ্রী। শনিবার রাজ্য সরকারের তরফে এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যের সর্বত্র হালাল ট্যাগ লাগানো খাদ্যপণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিতরণ এবং বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। হালাল শংসাপত্র সমেত যে সব ঔষধি এবং প্রসাধনী বিক্রি হয়, তা-ও এই মুহূর্তে থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্যকে সামনে রেখে এবং ধন্দ দূর করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে রাজ্য। (Halal Certified Products)


উত্তরপ্রদেশের ফুড কমিশনার শনিবার এই ঘোষণা করেছেন। তবে রাজ্যের বাইরে হালাল ট্যাগ বসানো খাদ্যসামগ্রী এবং পণ্যের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। শুধুমাত্র রাজ্যের মধ্যে উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা বসানো হয়েছে। আমিষ খাওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামে কিছু নিয়ম-নীতির কথা বলা রয়েছে, যার আওতায় পশুহত্যার সময় পশুটিকে যতটা সম্ভব যন্ত্রণামুক্ত মৃত্যু প্রদান করা এবং সর্বশক্তিমানের নাম উচ্চারণ করে তাঁর প্রতি নিবেদন করার রীতি রয়েছে। (Uttar Pradesh News)


হালাল খাদ্যপণ্য তৈরিতে বাসনপত্রের ধোয়া মাজাও গুরুত্ব রাখে। কোনও ভেজাল মেশানো যায় না। ডেয়ারি পণ্য থেকে সুগার বেকারির পণ্য, ভোজ্য তেল এমন একাধিক পণ্যের উপর হালাল ট্যাগ বসানো থাকে। ওই ট্যাগ থাকার অর্থ, ইসলামি রীতি মেনেই ওই খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করা হয়েছে। নোনতা জিনিসের মতো, নিরামিষ খাদ্যপণ্যের উপরও এই ট্যাগ থাকে। অনেক ক্ষেত্রে নিরামিষ খাবারে অ্যালকোহল বা অন্য কোনও উপাদান ব্যবহৃত হয়, যা ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা মুখে তোলেন না। ইসলামি রীতি অনুযায়ী, সেগুলি হালালের আওতায় পড়ে না, হারামের আওতায় পড়ে। তাই সবসময় হালাল খাদ্য বলতে আমিষ খাবারকে বোঝানো হয় না।


আরও পড়ুন: Indian Troops in Maldives: দীর্ঘ বোঝাপড়ায় ইতি! ভারতকে সেনা প্রত্যাহার করতে বলল মলদ্বীপ, নেপথ্যে কি চিন


ধর্মপ্রাণ ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা এই হালাল খাবার খান। তার জন্য হালাল খাদ্যপণ্যে, হালাল করা খাবার বলে বিশেষ ট্যাগও ঝোলানো থাকে। সেই ট্যাগ বসানো খাবার-দাবারই নিষিদ্ধ করল উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার।  তাদের যুক্তি, হালাল ট্যাগ বসানো খাদ্যসামগ্রীতে একটি সমান্তরাল পদ্ধতি চলে, যাতে ধন্দ তৈরি হয়। খাবারের গুণগত মান নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা এবং খাবারের গুণগত মান আইনের সঙ্গে এই হালাল ট্যাগ বসানো খাবার সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলেও দাবি করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। 


হালাল ট্যাগ বসানো খাবার নিয়ে সম্প্রতি বেশ কিছু অভিযোগ সামনে আসে উত্তরপ্রদেশে। একটি হালাল খাদ্য উৎপাদনকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, হালাল খাবার বলে মানুষের ধর্মভাবনার সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছে। হালাল বলে দাবি করে ভুয়ো ট্যাগ বসিয়ে খারাপ খাদ্যপণ্য বিক্রি করছে তারা। হালাল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড চেন্নাই, জামিয়ত উলামা-ই-হিন্দ হালাল ট্রাস্ট দিল্লি, হালাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া মুম্বই, জামিয়ত উলামা মহারাষ্ট্র এবং আরও বেশ কিছু সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগও জমা পড়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেশ কিছু সংস্থা।