মেরঠ: ভয়াবহ, গা শিউরে ওঠা। জীবনসঙ্গীর হাতে বেঘোরে প্রাণ গেল উত্তর প্রদেশের মিরাটের একজন মার্চেন্ট নেভি অফিসারের । দাম্পত্যের প্রায় এক দশক পার করার পর এমন ভয়াবহ পরিণতি হল স্বামীর। শুধুই খুন নয়, যে কায়দায় লোপাট করা হয় মৃতদেহ, তা শিরদাঁড়ায় শীতল স্রোত বইয়ে দেওয়ার মতো। 


দাম্পত্যে তৃতীয় জন


সৌরভ রাজপুত এবং মুসকান রাস্তোগি ২০১৬ সালে বিয়ে করেন। রীতিমতো প্রেমের পর বিয়ে।  স্ত্রীর সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে আগ্রহী ছিলেন সৌরভ । তাই ছেড়ে দেন মার্চেন্ট নেভির চাকরিও। বিষয়টা রোম্যান্টিক শুনতে লাগলেও পরিবারের মানুষ সহজে মেনে নিতে পারেনি সৌরভের এইসব সিদ্ধান্ত। সে-যাই-হোক, কাটছিল ভালই। ২০২৯ এ সংসারে আসে এক কন্যা। কিন্তু তারপরই সুখী-পরিবারে চিড় ধরে। সৌরভ জেনে ফেলেন, মুসকানের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে তাঁরই বন্ধু সাহিলের। 


এর পর থেকে দাম্পত্যে টানাপোড়েন তৈরি হয়। বিবাহবিচ্ছেদের কথাও ওঠে। তবে সৌরভ মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে পিছিয়ে আসেন। তিনি মার্চেন্ট নেভিতে পুনরায় যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২৩ সালে, কাজের জন্য দেশ ছেড়ে চলে যান সৌরভ।   


'১৫ টুকরো করে ফেলা হয় দেহ'


কিন্তু সৌরভের অস্তিত্বটুকুও রাখতে রাজি ছিলেন না স্ত্রী।  ২৮ ফেব্রুয়ারি ছিল সৌরভ-মুসকানের মেয়ের ছয় বছরের জন্মদিন। সেই জন্য তার আগেই বাড়ি ফেরেন সৌরভ। পুলিশ সূত্রে খবর, ততদিনে মুসকান এবং সাহিল সৌরভকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেই ফেলেছিল।  পুলিশের কাছে দেওয়া তাদের জবানবন্দি অনুযায়ী, ৪ মার্চ সৌরভের খাবারে মুসকান ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। ঘুমন্ত সৌরভকে ছুরির পরপর কোপ মেরে হত্যা করে সাহিল। খুন চাপা দিতে, ১৫ টুকরো করে ফেলা হয় দেহ। তারপর একটা ড্রামে ঢুকিয়ে সিমেন্ট দিয়ে সিল করে দেয় তারা। পরিকল্পনা ছিল সময়মত দেহ সরিয়ে দেওয়া হবে।  


ছেনি-হাতুড়ি নিয়ে গিয়ে ট্যাঙ্কের সিমেন্ট-সিল ভেঙে দেহ উদ্ধার


এদিকে বেশ কয়েকদিন  সৌরভের খোঁজ না পেয়ে তার পরিবার অভিযোগ দায়ের করে। তারপর,  পুলিশ মুসকান এবং সাহিলকে হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা ভেঙে পড়ে এবং নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। তারপর পুলিশ ছেনি-হাতুড়ি নিয়ে গিয়ে ট্যাঙ্কের সিমেন্ট-সিল ভেঙে দেহ উদ্ধার করে।