প্রথমে আইআইটি । তারপর আইআইএম। এই দুই প্রতিষ্ঠানে পড়া মানেই নিশ্চিত সাফল্য। মোটা মাইনের চাকরি। উন্নতির খাড়া সিঁড়ি সামনেই। রাধিকা মুন্সির ক্ষেত্রেও বিষয়টা ছিল তেমনই। ভারতের দুটি নামীদামী প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্রী রাধিকা মুন্সি। আইআইটির সামনের সারির ছাত্রী। আইআইএম-টপার। তারপর...ঠিক যেমনটা হোয়ার কথা ছিল তেমনটাই। বিরাট চাকরির অফার। মোটা মাইনে। কিন্তু হঠাৎই বদলে গেল রাধিকার স্বপ্ন। একটা সময় যিনি জান-প্রাণ লড়িয়ে দিতেন ভাল রেজাল্ট করে একটা ভাল চাকরি পাওয়ার জন্য, তিনি সেই চাকরি পেয়েও মুখ ফেরালেন।
রাধিকা মুন্সির কথায়। জীবন তখন স্বপ্নের পিছনে হাঁটতে চাইছিল। নামিদামি সংস্থার ম্যানেজমেন্টের চাকরি বাদ দিয়ে তিনি মনপ্রাণ সঁপে দিলেন শাড়িতে। ভারতীয় মহিলা আর শাড়ি-প্রীতি নেই, এমনটা সত্যিই বিরল। তবে রাধিকা তাঁর শাড়ির প্রতি ভালবাসাকে একটা অন্য মাত্রা দিতে চেয়েছিলেন। লঞ্চ করতে চেয়েছিলেন শাড়ির নিজস্ব ব্র্যান্ড। নিজের স্বপ্নের ব্র্যান্ড, আনোরাহ্ লঞ্চ করলেন রাধিকা। ছেড়ে দিলেন লাভজনক কর্পোরেট সেক্টরের কেরিয়ার ।
ইনস্টাগ্রামে নিজের কথা বলতে গিয়ে রাধিকা বলেছেন,তিনি আইআইটি এবং আইআইএম থেকে পাস করেছেন। এমবিএ করার সময়, তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্যই ছিল পাশ করার পর সর্বোচ্চ বেতনের প্যাকেজের চাকরি পাওয়া । সেই সময়, তাঁর নিজস্ব শাড়ি ব্র্যান্ড চালু করার ধারণাটি তার মাথায় আসেনি। জানালেন, IIM আহমেদাবাদে শীর্ষ স্থান পেয়েছিলেন। তখন লক্ষ্য ছিল একটা ভাল চাকরি পাওয়া। কিন্তু জীবন অপ্রত্যাশিতভাবে মোড় নেয়...নিজের স্বপ্নকে তাড়া করতে গিয়ে তিনি চাকরি ছাড়েন।
ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি শেয়ার করেছেন কেন তিনি আইআইটি রুরকি এবং আইআইএম আহমেদাবাদ থেকে ডিগ্রি অর্জন করার পরেও তিনি নিজের ব্যবসা করার কথা ভাবলেন। তিনি মনে করেন, কোনও কোম্পানির প্যাকেজ যতই বেশি হোক না কেন , তা নিজস্ব উদ্যোগে কিছু করার কাছে কিচ্ছু নয়! একজন উদ্যোক্তার জীবন উত্থান-পতনে ভরা এবং এমনকী সর্বোচ্চ বেতনের চেকও এই যাত্রার রোমাঞ্চের তুলনায় কম। তিনি যখন নিজের শাড়ির ব্র্যান্ড চালু করেন, তখন চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সামাজিক চাপের মুখোমুখি হয়েওছিলেন। " প্রথমে আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম যখন আমি শাড়ি ডিজাইন করব...মানুষ আমার শাড়ি পছন্দ করবে কিনা"তিনি মনে করান, "দুর্ভাগ্যবশত, সাফল্য সম্পর্কে সমাজের ধারণা খুবই সীমিত"।
২০২৩ সালে তার ব্যবসা শুরু করেন। এখন তাঁর ব্র্যান্ড বহু মানুষের ভালবাসা।