নয়াদিল্লি: উত্তরাখণ্ডে ভেঙে পড়ল হেলিকপ্টার। দেহরাদূণ ও কেদারনাথ রুটে উড়ছিল হেলিকপ্টারটি। কিন্তু উড়ানের কিছু ক্ষণের মধ্যেই নিখোঁজ হয়ে যায় সেটি। ত্রিযুগীনারায়ণ এবং গৌরিকুণ্ডের মাঝামাঝি জায়গায় সেটি রেডার থেকে গায়েব হয়ে যায়। পরিণতি আঁচ করে সেই থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়েছিল। আর তার কিছু ক্ষণ পরই জানা যায়, হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়েছে। হেলিকপ্টারে সাত যাত্রী সওয়ার ছিলেন, তাঁদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। (Uttarakhand Chopper Crash)
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ত্রিযুগীনারায়ণ এবং গৌরিকুণ্ডের মাঝে রুদ্রপ্রয়াগে ভেঙে পড়ে হেলিকপ্টারটি। কপ্টারের পাইলটও মারা গিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে কপ্টারটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। কারণ স্থানীয় সূত্রে খবর, পাহাড়ি এলাকায় উড়ানের সময় হেলিকপ্টারে চারজনের বেশি যাত্রী তোলা উচিত নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কপ্টারটিতে সাত যাত্রী ছিলেন বলে খবর। মৃতদের মধ্যে মহারাষ্ট্রের ইয়াবাতমালের এক পরিবার রয়েছে। একই পরিবারের তিন জন মারা গিয়েছেন। রাজকুমার, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে কাশীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা কেদারনাথ দর্শন সেরে ফিরছিলেন। (Helicopter Crash in Uttarakhand)
দুর্ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে পাহাড়ি এলাকায় কপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। পিছনের অংশ ভেঙে গিয়েছে কপ্টারটির। উদ্ধারকারী দল ইতিমধ্যেই রওনা দিয়েছে দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে। এই কেদারনাথ রুটে আগেও দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে হেলিকপ্টার। অতি সম্প্রতিই একটি হেলিকপ্টার জরুরি অবস্থায় অবতরণ করে উত্তরাখণ্ডের রাস্তায়। সেই সময় হেলিকপ্টারের পিছনের অংশ একটি গাড়ির উপর চেপে বসে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় গাড়িটিও। পরিসংখ্যান বলছে, গত দেড় মাসে এই নিয়ে চার-চারটি কপ্টার দুর্ঘটনা ঘটল।
রবিবার সকালে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কপ্টারটি আরিয়ান এভিয়েশন সংস্থার বলে জানা গিয়েছে। কেদারনাথ রুটে বেসরকারি সংস্থার হেলিকপ্টারের উড়ান নিয়ে বরাবর প্রশ্ন উঠছিল। বহন ক্ষমতার চেয়ে বেশি সংখ্যায় পুণ্য়ার্থী তোলা হচ্ছে হেলিকপ্টারে, নিরাপত্তার পরোয়া না করে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থ দেখা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। চারধাম যাত্রাকে ঘিরে হেলিকপ্টার পরিষেবা শুরু হলেও, বেসরকারি সংস্থাগুলির উপর সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে।
উত্তরাখণ্ডে চারধাম যাত্রাকে ঘিরে পর পর হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। পাহাড়ে উড়ান পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ডাবল ইঞ্জিনের কপ্টার বাধ্যতামূলক হয়। কিন্তু উত্তরাখণ্ডে যে বেসরকারি সংস্থাগুলির হেলিকপ্টার পরিষেবা প্রদান করা হয়, সেখানে প্রায় সমস্ত কপ্টারই সিঙ্গল ইঞ্জিনের বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিনে দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী।