দেহরাদূণ: নয় নয় করে ১০ দিন ধরে আটকে সুড়ঙ্গের ভিতর। সরু নলের মাধ্যমে যৎসামান্য খাবার পৌঁছেছে পেটে। উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে ভেঙে পড়া সুড়ঙ্গের মধ্যে এবার দেখা মিলল আটকে পড়া শ্রমিকদের। মঙ্গলবার সকালে নলের মধ্যে দিয়ে আলো এবং ক্যামেরা ঢোকানো হয়। তাতেই আটকে থাকা শ্রমিকদের দেখতে পাওয়া গিয়েছে। (Uttarakhand Tunnel Collapse)


স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ছয় ইঞ্চির নলের মধ্যে গিয়ে এন্ডোস্কোপিপ ক্যামেরা ঢোকানো হয়েছে ধ্বংসস্তূপের ভিতরে। আসলে ওই নলটি খাবার পৌঁছনোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। গত রাতেও ওই নল দিয়েই খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়। আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিকের দেখা পেতে ওই নল দিয়েই ক্যামেরা ঢোকানো হয় পরে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি ওই ভিডিও পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। (Uttarkashi Tunnel Collapse)


ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি উঠে এসেছে, তাতে টুপি মাথায়, কাজের পোশাকেই দেখা গিয়েছে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের। ক্যামেরা দেখে হাত নেড়েছেন তাঁরা। জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ঠিকই আছেন। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ওয়াকিটকির মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন উদ্ধারকারীরা। উদ্ধারকারীদের কথাতেই ক্যামেরার সামনে হাজির হন তাঁরা।



আরও পড়ুন: Fire Incident: বিশাখাপত্তনমের জেটিতে ভয়াবহ আগুন, পুড়ে খাক অন্তত ১৫টি নৌকা


গত ১০ দিন ধরে ওই সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক। গত কালই গরম খাবার খেতে পারেন তাঁরা। কাচের বোতলে ভরে, নলের মাধ্যমে গরম খিচুড়ি পাঠানো হয় ধ্বংসাবশেষের অন্দরে। তার আগে পর্যন্ত ড্রাই ফ্রুটস এবং জল খেয়েই ছিলেন সকলে। উদ্ধারকার্যের দায়িত্বে থাকা কর্নেল দীপক পাটিল জানিয়েছেন, শীঘ্রই আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে মোবাইল ফোন এবং চার্জার পৌঁছে দেওয়া হবে। 


গত ১২ নভেম্বর উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।  ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালগাঁওকে সংযুক্ত করতে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ চলছিল সেখানে। সেই কাজ চলাকালীন, ওই নির্মীয়মান সুড়ঙ্গটি ভেঙে পড়ে।  নির্মীয়মান সুড়ঙ্গটির ১৫০ মিটার অংশ ভেঙে পড়েছে বলে জানা যায়। সেই সময় সুড়ঙ্গের ভিতর কাজ করছিলেন ওই ৪১ জন শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়েন তাঁরা।


সেই থেকে আটকেই রয়েছেন তাঁরা। উদ্ধারকার্য যদিও চলছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনো যায়নি। ড্রিল মেশিন চালাতে গেলে তীব্র শব্দে ফাটল ধরে। ফলে মাঝপথে সেই কাজ বন্ধ রাখতে হয়। পাহাড়ের উপর দিয়ে উল্লম্ব ভাবে গর্ত খোঁড়ার কাজও চলছে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু আটকে পড়া সকলকে কবে উদ্ধার করা যাবে, এখনও পর্যন্ত সেই নিয়ে ধন্দ রয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন, ITPB মোতায়েন রয়েছে সেখানে। ডিফেন্স রিসার্চ সংস্থা DRDO-র রোবোটিক্স টিমও পৌঁছেছে ঘটনাস্থলে।