নয়া দিল্লি: যতদিন যাচ্ছে ততই ভারতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রাবল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যেখানে কয়েক বছরে এক বার হত, কালে কালে তা কমে বছরে দু থেকে তিনটি অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হচ্ছে দেশ। কিন্তু আগামী দিন আরও কঠিন হতে পারে। সময় যত এগোবে, প্রকৃতির রোষানলে আরও পড়তে হতে পারে আমাদের দেশকে। জলবায়ুর পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরকে আরও অশান্ত করে তুলছে। 


সম্প্রতি ১৮৯১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে, সেখানে রয়েছে কিছু আগাম সতর্কবার্তা। সেই তথ্য ইঙ্গিত করে যে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা এবং অতি ভারী এবং অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ও বাড়বে। সাম্প্রতিক বছরে গোটা দেশেই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে রেকর্ডহারে। বিজ্ঞানীরা উত্তর ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরের উপর ঘূর্ণিঝড়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন র্ণিঝড়ের তীব্রতা এবং ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি পেয়েছে। 


আরব সাগরে সৃষ্ট এসব ঘূর্ণিঝড়ের বেশিরভাগই ওমান ও ইয়েমেনের উপকূলে আছড়ে পড়ছে, এমনটাই রাজ্যসভায় লিখিত জবাবে দেশের ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রী ডাঃ জিতেন্দ্র সিং। তবে চিন্তা বাড়ছে গুজরাট এবং মহারাষ্ট্র উপকূল নিয়ে। দেখা যাচ্ছে, বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে তৈরি হওয়া পাঁচটি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে, তিন থেকে চারটি স্থলভাগে আছড়ে পড়েছে গড়ে। সম্পদের ক্ষতির পাশাপাশি জীবন বিপন্নও হয়েছে, একাধিক প্রাণহানি ঘটেছে। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির নিচু উপকূলীয় অঞ্চলগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অনেকটাই। 


মৌসম ভবনের তরফে যদিও জানান হয়েছে যে এখন আগাম সতর্কবার্তার খব দ্রুত জানান হয় ফলে প্রাণ হারানোর সংখ্যা কমে গেছে অনেকটাই। তা সে সাম্প্রতিক আম্ফান হোক কিংবা দিনকয়েক আগের জাওয়াদ। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বজুড়ে এমন কিছু চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনা বেড়েছে। রাষ্ট্রসংঘের তরফে জানান হয়েছে দুই দশকের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। যা উষ্ণায়নকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। এখনই উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে হিমবাহ গলতে শুরুর ঘটনা ঘটছে। তাই আগাম সতর্ক না হলে বিপত্তি আসন্ন তা বলাই বাহুল্য।