বৈশালী: জীবনে লড়াই একারই হয়। কিন্তু প্রিয়জন হারিয়ে সেই লড়াই একা লড়ে যাওয়া মুখের কথা হয় না কখনই। স্ত্রী হারিয়ে যখন শোকাস্তব্ধ স্বামী, তখন সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন না কেউই। পরিবার-পরিজন বাদ দেওয়া গেলেও, হাসপাতালও এল না এগিয়ে। মৃত্যুর পরও ঘণ্টার পর ঘন্টা পরে রইল দেহ। অগত্যা শেষমেষ নিজেই স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে করে বয়ে নিয়ে হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে যান এক ব্যক্তি। 


বিহারের একটি হাসপাতালে এমনই এক দৃশ্য দেখা গিয়েছে। সে ভিডিও ভাইরালও হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। বিহারের বৈশালী জেলায় অবস্থিত সদর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার এক ব্যক্তি পৌঁছন তাঁর অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে। যদিও চিকিৎসা শুরুর পর পরই চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন ওই মহিলার মৃত্যুর খবর। এমতাবস্থায় মৃত স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু এগিয়ে এল না কেউই।


ঘণ্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা। মৃতদেহ নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেমন অস্বীকার করে তেমন পাওয়া যায় না অ্যাম্বুলেন্সও। এরপর ধৈর্যর বাঁধ ভেঙে স্ত্রী মৃতদেহ  নিজের কাঁধে তুলেই হাসপাতালের চত্ত্বর ছাড়েন স্বামী। পিছনে রেখে দিয়ে যান একরাশ প্রশ্ন, এক অমানবিক চিত্র। কিন্তু সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি কেউই। 


ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্ত্রীর মরদেহ কাঁধে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন ওই ব্যক্তি। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ভিডিওতে দেখা ব্যক্তিটি হলেন বিদুপুরের রামধৌলির বাসিন্দা কৃষ্ণ কুমার, যিনি তার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। 


যদিও এ বিষয়ে সিভিল সার্জন অখিলেশ কুমার মোহন বলেছেন যে কর্তব্যরত ডাক্তার বলেন হাসপাতালে ভর্তির পরই ওই মহিলাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এরপর ওই ব্যক্তিকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি কোনও কথা না শুনেই মৃতদেহ নিয়ে বেরিয়ে যান। যদিও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এই অবস্থা দেখেও কেন হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁকে আটকাল না? কেন পাওয়া গেল না অ্যাম্বুলেন্স? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।