নয়াদিল্লি: করতালি, উচ্ছ্বাসে চারিদিক যখন মুখর, কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে এসেছিল তাঁর। তার পরই সোশ্যাল মিডিয়া ভরে গিয়েছিল নাচ-গানের ভিডিও-য়। চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO-র বিজ্ঞানীরা নাচ-গান করে সাফল্য উদযাপন  করছেন বলে দাবি করা হয়েছিল তাতে। এতবড় সাফল্যের পর উদযাপন না হলেই নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার বাড়াবাড়ি বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সত্যতা যাচাই করে জানা গেল, ওই ভিডিও-টি বুধবারের নয়, তার আগের। (ISRO Scientists Viral Video)


বুধবার সন্ধে ৬টা বেজে ৪ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করে ভারতের চন্দ্রযান-৩। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে, খানাখন্দে ভরা, বন্ধুর জমিতে পা রেখেছে ভারতের মহাকাশযান। তার পরই রাতে ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়, তাতে ISRO প্রধান এস সোমনাথ এবং তাঁর সহকর্মীদের জমকালো পরিবেশে, উচ্চসঙ্গীতের সঙ্গে নাচ-গান করতে দেখা যায়। তাতে ISRO-র বিজ্ঞানীরা চন্দ্রযান-৩ অভিযানের সাফল্য উদযাপন করছেন বলেই ধরে নেন সকলে। (Chandrayaan 3 Success)



আরও পড়ুন: Chandrayaan 4: সবে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে চন্দ্রযান-৩, আবারও কাজে নেমে পড়ল ISRO, ’২৬-এ চন্দ্রযান-৪


কিন্তু সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর তরফে ওই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করা হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, ভিডিও-টি মোটেই বুধবার রাতের নয়। চন্দ্রযান-৩ পৃথিবী থেকে রওনা দেওয়ার পর পর রেকর্ড করা হয়েছে, তেমনও নয়।  পিটিআই জানিয়েছে, জুলাই মাসে জি-২০ সম্মেলন চলাকালীন বিশেষ আয়োজন হয়েছিল। তার মধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও ছিল। হিন্দি গানও বাজানো হয়, তাতেই সকলে  পা মেলান।



দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বুধবার সন্ধেয় চাঁদের মাটি স্পর্শ করেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের ল্যান্ডার 'বিক্রম' এবং রোভার 'প্রজ্ঞান'। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এক চন্দ্রদিবস অনুসন্ধান চালাবে তারা, পৃথিবীর হিসেবে যা প্রায় ১৪ দিন। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে জল এবং খনিজের সন্ধান করার পাশাপাশি মাটির উপাদানের নমুনা সংগ্রহ করবে। 


২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ অভিযানের লক্ষ্য়ও একই ছিল। কিন্তু চাঁদের মাটিতে নিরাপদে অবতরণ করতে পারেনি চন্দ্রযান-২। বরং মাটি ছোঁয়ার আগেই ভেঙে পড়ে। এবার তাই গোড়া থেকেই সাবধানী ছিল ISRO. পালকের মতো চাঁদের মাটি স্পর্শ করে চন্দ্রযান-৩, যা অন্য কোনও দেশ আজ পর্যন্ত কের উঠতে পারেনি। তাই চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি ছোঁয়ায় উচ্ছ্বাসে ভাসছে গোটা দেশ। সাফল্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গতকাল আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এস সোমনাথও। ভারতের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে চন্দ্রপৃষ্ঠ স্পর্শকে ব্যাখ্যা করেন তিনি।