মুর্শিদাবাদ: সেরে গিয়েছে পায়ের চোট। এখন অপেক্ষা প্লাস্টার কাটার। কলকাতায় ফিরলেই প্লাস্টার কাটবেন চিকিৎসকরা। এমনটাই জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদের বহরমপুর অডিটোরিয়ামে বক্তব্য রাখার মাঝে যে খবর জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো।


গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় প্রচারের সময় পায়ে চোট পেয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। নন্দীগ্রাম আসনে লড়াই করার জন্য হলদিয়ায় মনোনয়ন জমা দিয়ে তাঁর রেয়াপাড়ার থাকার বাড়িতে ফেরার পথে ঘটেছিল দুর্ঘটনা। প্রচণ্ড ভিড়ের মাঝে বিরুলিয়া বাজারে ঘটেছিল দুর্ঘটনা। যার ফলে বাঁ পায়ে চোট পেয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। চক্রান্ত করে তাঁকে আহত করা হয়েছে বলেই অভিযোগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


নন্দীগ্রাম থেকে গ্রিন করিডর করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আনা হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর চিকিৎসকদের বিশ্রামের পরামর্শে বিরুদ্ধে গিয়ে কার্যত কিছুটা জোর করেই হাসপাতাল ছেড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  তারপর কয়েকদিনের বিশ্রাম নিয়েই কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ ভোটপ্রচারের জন্য চষে বেড়িয়েছেন তিনি।


হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে প্লাস্টার করে একটি বিশেষ ধরণের চটির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাদের পরামর্শ মেনেই তারপর থেকে হুইলচেয়ারেই ঘোরাফেরা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। পদযাত্রা হোক বা জনসভা, সবেতেই হুইলচেয়ারে হাজির হয়েছেন।


মাঝে একবার সতীর্থদের সাহায্য নিয়ে নন্দীগ্রামে ভোটপ্রচারের মাঝে জাতীয় সঙ্গীতের সময় উঠেও দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেটা ছাড়া নন্দীগ্রামে নিজের কেন্দ্রে ভোট থেকে গোটা রাজ্যজুড়ে যাবতীয় প্রচার সবেতেই হুইলচেয়ারে ঘোরার মাঝে পায়ের আঘাতের প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি তৃণমূলনেত্রী।


গেরুয়া শিবির চক্রান্ত করে তাঁকে আহত করে ভোটের সময় ঘরবন্দি করে দিতে চেয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের বেশ কিছু প্রচারে জুড়ে যায় 'ভাঙা পায়েই খেলা হবে'।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পায়ে চোট পেলেও গোটা পর্ব নিয়ে তাঁকে খোঁচা দিতে অবশ্য ছাড়েনি বিজেপি শিবির। দুর্ঘটনাকে তিনি চক্রান্ত বলে চালিয়ে সমবেদনা আদায়ের চেষ্টা করছেন বলে পাল্টা বলেছিল গেরুয়া শিবির।


গোটা পর্বের মাঝে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেদিনের নিরাপত্তায় থাকায় একাধিক পুলিশকর্তাকেও বরখাস্ত করে নির্বাচন কমিশন। আপাতত সেই সব পর্ব পিছনে ফেলে পায়ের প্লাস্টার কাটিয়ে ফের চেনা মেজাজে ফেরা সময়ের অপেক্ষা, সেটাই বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।