কলকাতা: বিজেপিতে যোগ দিয়ে দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে পদ্ম ফোটানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এই আবহেই শুক্রবার পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছেন শুভেন্দুর ভাই তথা কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক সৌমেন্দু অধিকারী-সহ ১৫ জন বিদায়ী কাউন্সিলর। এবার তৃণমূলের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।
বঙ্গ রাজনীতীর অন্দরে ক্রমেই বাড়ছে উত্তাপ। শাসক দলের আরও দুই সাংসদ, শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী ও ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীর বিজেপি যোগ দানের জল্পনাও ক্রমশ বাড়ছে। যার ফলে আগামী বিধানসভায় ভাল ফল নিয়ে একরকম নিশ্চিত বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ওঁরা আসতেই পারেন। আমরা সবার জন্য দরজা খুলে রেখে দিয়েছি। পূর্ব মেদিনীপুরে যার জন্য জিততে পারিনি তারাই এখন আমাদের পার্টিটে এসে জেতার সংকল্প করছে। ৩৫টাই জিতব। জঙ্গলমহল থেকে তৃণমূলকে ফাঁকা করার কাজ শুরু হয়েছে, গঙ্গা পর্যন্ত চলবে।
পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েনি তৃণমূল। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এপ্রসঙ্গে বলেন, অনেক কিছু আগে বলেছে কোনটা হয়েছে? কোনোটাই নয়। পাগলে কিনা বলে ছাগলে কী না খায়। মানুষ মেদিনীপুরে ভালোবাসে মমতা ব্যানার্জীকে । যত তাই বলুক । মেদিনীপুরের মানুষ তৃণমূল ছাড়া কাউকে পছন্দ করে না।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বরাবরই সরব বিজেপি। শনিবার কয়েক ধাপ এগিয়ে বাংলাকে আফগানিস্থানের সঙ্গে তুলনা করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, রাজ্যে ধর্ষণ, খুন, লুঠ যে হারে হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে আফগানিস্থানের থেকেও অবস্থা খারাপ। পাল্টা ফিরহাদ বলেন, বিজেপি তালিবানের মতো। বিজেপির কাছে এগুলো খুব কাছের। মানুষ মারা, ধর্ষণ বিজেপির রাজ্য গুলোই এগুলোই হয়ে থাকে।
এদিকে করোনা আবহেই কাশ্মীরে সম্প্রতি জেলা স্তরে নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যে কোভিডের কারণে থমকে রয়েছে শতাধিক পুরসভার ভোট! যা নিয়েও এদিন তৃণমূল-বিজেপির তরজা তুঙ্গে উঠেছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, কাশ্মীরে যদি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হতে পারে, তাহলে বাংলায় কেন নয়? কলকাতার অবস্থা কী কাশ্মীরের থেকেও খারাপ? পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায় ভোট এখানে হবে না কে বলল? বিধানসভাও তো হবে।
কয়েক মাস পর বিধানসভা ভোট। তার আগে জঙ্গলমহলে কে কটা আসনে জয়ী হবেন, তা নিয়ে শাসক-বিরোধীর তরজা তুঙ্গে। প্রসঙ্গত, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে মোট পাঁচটি লোকসভা আসন। এর মধ্যে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম আসন দুটি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে কাঁথি, তমলুক ও ঘাটাল আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এই তিন জেলায় মোট বিধানসভা আসনের সংখ্যা ৩৫টি।