মুম্বই : শতাব্দীর সবথেকে শুষ্ক অগাস্ট মাস হতে চলেছে ভারতে ? অন্তত সেদিকেই এগোচ্ছে প্রকৃতির গতিপ্রকৃতি। দেশের বড় অংশে বৃষ্টির অপ্রতুলতা সেদিকেই নিয়ে যাচ্ছে দেশকে। এল নিনো এর জন্য আংশিক দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে একথা জানায় আবহাওয়া দফতরের দুই আধিকারিক।


১৯০১ সালে যবে থেকে রেকর্ড রাখা শুরু হয়, তার পর থেকে এবছরই সবথেকে কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে অগাস্টে। যার ফলে, গ্রীষ্মে বপন করা ফসলের ফলন নষ্ট হতে পারে। ধান থেকে সয়াবিনের ফলন মার খেতে পারে। তার জেরে বাড়তে পারে দাম। খাদ্যের জোগানেও ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 


৩ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির জন্য বর্ষা অত্যাবশ্যক। ভারতে জলাধারগুলি ভর্তি করার জন্য প্রয়োজনীয় ৭০ শতাংশ বৃষ্টি সরবরাহ করে এই বর্ষা। আবহাওয়া দফতরের এক সিনিয়র আধিকারিক জানান, "আমরা যতটা আশা করেছিলাম, সেই অনুযায়ী বর্ষা হচ্ছে না। দেশের দক্ষিণ, পশ্চিম এবং মধ্য অংশে বর্ষার বিপুল পরিমাণ ঘাটতি হতে চলেছে। এই মাসে গড়ে ১৮০ মিমি বা ৭ ইঞ্চির কম বৃষ্টিপাত পেতে চলেছে ভারত।  


এর আগে আবহাওয়া দফতরের তরফে অগাস্টে ৮ শতাংশ বৃষ্টিপাতের ঘাটতির আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। এর আগে অগাস্টে সবথেকে কম বৃষ্টিপাত হয়েছিল ২০০৫ সালে। সেবার বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১৯১.২ মিমি বা সাড়ে ৭ ইঞ্চি। তবে, আগামী দুই সপ্তাহে বর্ষার বৃষ্টি বাড়তে পারে দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে এবং মধ্যের কিছু অংশে। যদিও উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে শুষ্ক দশা অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের তরফে। 


দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, অগাস্টে মূলত ৫ থেকে ৭দিন আমরা শুষ্ক অবস্থা বা বৃষ্টিপাতের ঘাটতি দেখতে পাই। যদিও এবার দক্ষিণ ভারতে শুষ্ক দশা দীর্ঘমেয়াদি হয়েছে। যা কিছুটা অস্বাভাবিক। এল নিনো ভারতের আবহাওয়ার উপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে দিয়েছে। 


গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টি ভারতে চাষাবাদে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই সময়ে ভারতের অর্ধেকের বেশি জমিতে সেচের জলের অভাব থাকে। পয়লা জুন থেকে চাষিরা ধান, সয়াবিন, আখ, ভুট্টা, তুলার চাষ শুরু করে দেন। যখন দেশের দক্ষিণ প্রান্তে কেরলে নামে বর্ষা, ঠিক সেইসময়। কিন্তু, এবার দীর্ঘমেয়াদি শুষ্ক অবস্থা ফলনে প্রভাব ফেলতে পারে।