সুনীত হালদার, হাওড়া: সারা দেশের সঙ্গে এরাজ্যেও প্রলয় ঘটাচ্ছে করোনা ভাইরাস। বেড়েই চলেছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা। প্রতিদিনের সংক্রমণের হারেও উদ্বেগ।এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে হাওড়া জেলায় ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের ঘরে ফেরালেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা।
ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক এবং বাঁকড়া গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধানের যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার ঘরে ফিরল বিজেপি কর্মীদের ৩৫টি পরিবার। অভিযোগ, বিধানসভা ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় এতদিন এলাকা ছাড়া ছিলেন তাঁরা।
ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ বলেছেন, এই সব লোকেদের বিজেপি ভুল বুঝিয়ে গন্ডগোলে কাজে লাগায়। পরে তারা আতঙ্কে ঘরছাড়া হয়ে যায়। যেখানে যেখানে এই ধরনের ঘরছাড়া কর্মীরা আছে তাদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা বলেছেন, আমি তখনই উদ্যোগটাকে সফল বলব যখন সব বিজেপি কর্মী নির্ভয়ে ফিরবে। এগুলো সবই আইওয়াশ।
করোনা পরিস্থিতিতে কার্যত-লকডাউনের মধ্যে ঘরে ফিরতে পেরে খুশি বিজেপি কর্মীরা। বিজেপি কর্মী অঞ্জলি পাঁজা বলেছেন, ঘরে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে।
বিধানসভা ভোটের ফল বেরনোর পর হাওড়ার বিভিন্ন অঞ্চল তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে একাধিকবার তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, রাজনৈতিক হিংসায় ঘরছাড়া হন অনেকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, তাঁরাই ঘরে ফিরলে এদিন।
এর আগে ভোট পরবর্তী অশান্তির জেরে বীরভূমে বাড়িছাড়া বিজেপির ৮টি পরিবারকে গ্রামে ফেরান তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। রাজনৈতিক সম্প্রীতির এই নজির দেখা যায় ময়ূরেশ্বরের রাতমা গ্রামে।বিজেপির দাবি, ভোট-পরবর্তী হিংসার জেরে ভোটের ফল ঘোষণার পরের দিন গ্রামছাড়া হয়ে যায় তাদের সমর্থক ৮টি পরিবার। বুধবার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্যোগে ফের গ্রামে ফেরেন তাঁরা।
ময়ূরেশ্বরের বিজেপি সমর্থক মাধব দাস বৈরাগ্য বলেছেন, ভোটের ফল ঘোষনার আমাদের উপর আক্রমণ হয়েছিল। তাই ভয়ে আমরা গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। আজ তৃণমূলের লোকজন আমাদের কে গ্রামে ফিরিয়ে আনে। তৃণমূলের বক্তব্য, গ্রামে কোনও অশান্তি নেই। তাই ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।স্থানীয় তৃণমূল নেতা মেঘনাদ দাস বলেছেন, ভোটের পর গ্রামে রাজনৈতিক ঝামেলা হয়েছিল। বিজেপি মারধর করেছিল। আমাদের কর্মীরা পাল্টা মারধর করে। সেই ভয়ে তারা গ্রাম ছাড়া হয়েছিল। আমার দেখলাম যে ,আমরা পাড়া প্রতিবেশী। একসঙ্গে থাকি ।তাই আজ ৮ টি পরিবার কে গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।এর কিছুদিন আগেই বীরভূমের সাঁইথিয়ায় তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্যোগে ঘরে ফেরেন বিজেপির ঘরছাড়ারা। আর ফিরেই শাসকদলে যোগ দেন তাঁরা।