কলকাতা : ভয়ঙ্কর সুনামির রূপ নিচ্ছে রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আগের সব রেকর্ড ভেঙে দৈনিক সংক্রমণ ছাড়িয়ে গেল ১৮ হাজারের গণ্ডি! রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণে পড়েছেন ১৮ হাজার ১০২ জন। এই সময় ব্যবধানে করোনার জেরে ১০৩ জন রাজ্যবাসীকে হারালাম আমরা।


গত বেশ কয়েকদিনের ধারা বজায় রেখে করোনার ভয়াবহ চিত্র অব্যাহত কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগণায়। এই দুই জেলাতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে ৩ হাজার ৯৭৩ ও ৩ হাজার ৯৮২ জন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন বলছে, কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগণায় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন কলকাতা ২৫ ও উত্তর ২৪ পরগণায় ২৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।


করোনা কালের কালো মেঘে ঢাকা এই দুঃসময়ে অবশ্য কিছুটা সোনালি রেখাও রয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মারণ ভাইরাসের কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ০৭৩ জন। যাও রেকর্ড। এর ফলে এই মুহূর্তে বঙ্গে করোনাজয়ীদের শতকরা গিয়ে দাঁড়াল ৮৫. ৪১ শতাংশে।


কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগণার পাশাপাশি সংক্রমণের চোখরাঙানি ক্রমশ বাড়ছে হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়ার মতো জেলাতেও। গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় ৯৯৪ জন, হুগলিতে ৯৮৬ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ৯৯৩ জন, পশ্চিম বর্ধমানে ৮৮৭ জন ও নদিয়ায় ৮৬৯ জন নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এই সময় ব্যবধানে নতুন করে ৯২৬ জন অ্যাকটিভ রোগী বাড়ায় পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ১ লক্ষ ২১ হাজার ৮৭২ জন।


বুধবার রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা রুখতে আংশিক লকডাউনে আরও কড়াকড়ির সিদ্ধান্ত জানিয়েছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গণ পরিবহনের বাস ও মেট্রো সংখ্যাও অর্ধেক করে দেওয়া হচ্ছে। সরকারি অফিসগুলিতে ৫০ শতাংশ হাজিরায় কাজ ও বেসরকারি অফিসগুলিতে ৫০ শতাংশ কর্মীদের ওয়ার্ক ফ্রম হোমের কথা বলা হয়েছে নির্দেশিকায়।


বিমানে চড়ে কাউকে রাজ্যে প্রবেশ করতে হলে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে নেগেটিভ করোনা রিপোর্ট। সকাল ৭টা থেকে ১০ ও বিকেল ৫ টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত বাজার খোলা থাকার কথা জানানো হলেও আগের নির্দেশ মতোই রেস্তোরাঁ, শপিং মল, বার, স্পা বন্ধই থাকছে। হোম ডেলিভারি, ওষুধ ও মুদিখানার দোকান অবশ্য লকডাউনের আওতার বাইরেই থাকছে।