সনৎ ঝা, দার্জিলিং: মঙ্গলবারই পাহাড়ে গুরুংপন্থী মোর্চা সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন দিলীপ ঘোষ! দেখানো হয় কালো পতাকা! গো ব্যাক স্লোগান ওঠে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে ঘিরে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাত ধরেছেন বিমল গুরুং।


বিমলপন্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এবার পাহাড়ে শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি নিয়ে রাজ্য সরকারকে দুষলেন দিলীপ ঘোষ। বুধবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি ট্যুইটারে লেখেন, আগে সুশিক্ষার জন্য সুনাম ছিল দার্জিলিং, কালিম্পং-এর। কলকাতা থেকে শুরু করে বাংলার বাইরের লোকেরাও তাঁদের সন্তানদের পড়াশুনোর জন্য এখানে পাঠাতেন। কিন্তু এখন সেই পড়াশুনো বন্ধ হয়ে গেছে। এখানের মতোই অবস্থা গোটা বাংলার। পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটাকেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। পাল্টা গত দশবছরে পাহাড়ে শিক্ষার মান কতটা উন্নত হয়েছে, তার রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরেছেন রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেব।


পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, ‘‘উনি কিছু জানেন না, পাহাড়ের সব স্কুলই স্বমহিমায় আছে, শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার এই ১০ বছরে পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় করেছে, উপাচার্য নিয়োগ, প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাস হয়েছে, সরকারি কলেজ হয়েছে , পরিকাঠামো বেড়েছে, কেন্দ্র কিছুই করেনি, চা গবেষণা কেন্দ্র আজও হয়নি। নিজেরা কিছু করেনি। অকল্পনীয় উন্নতি হয়েছে ৷’’


দিলীপ ঘোষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী বলছেন পাহাড়ের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রামকৃষ্ণ শিক্ষা পরিষদ বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিলন তামাঙ্গ বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ কী বলেছে সেই বিষয়ে মন্তব্য করব না, আন্দোলনের জন্য ক্ষতিগ্রস্থ হলেও এখন ঠিক হয়ে গেছে, পরিকাঠামো বেড়েছে, পাহাড়ে শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক ৷’’


বিমলপন্থীদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ থাকলেও বিনয়পন্থীদের গলাতেও স্পষ্ট বিজেপি-বিরুদ্ধ সুর। বিনয়পন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মুখপাত্র কেশব রাজ পোখরেল জানান, ‘‘দিলীপ ঘোষ বলার জন্যই আছে, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি পূরণ হয়নি, তিনটে এমপি দিয়েছি, কিছু করার কথা ভাবেনি, পাহাড়ে বিজেপির কোনও গুরুত্ব নেই ৷’’


এই পাহাড়েই গত লোকসভা ভোটের আগে গেরুয়া ঝড়ে ধরাশায়ী হয়েছে তৃণমূল। বিধানসভা ভোটের মুখে এই ক্ষোভ কি তবে হাওয়া বদলের অশনি সঙ্কেত? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের।