কলকাতা: রাজ্য-রাজনীতিতে চরম কৌতূহল, জল্পনা উসকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। যাবতীয় সরকারি নিরাপত্তা ছেড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি শুধুই একজন তৃণমূল বিধায়ক। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি কি বিজেপিতে যোগ দিয়ে শাসক দলকে ধাক্কা দেওয়ার প্ল্যান করছেন, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তো তাঁকে অফার দিয়েই রেখেছেন। বলেছেন, শুভেন্দুকে বলব আসুন, অনেকে এসেছেন। তবে জল্পনা উড়িয়ে বর্ষীয়াণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, শুভেন্দু এখনও আমাদের দলের সদস্য। শুভেন্দুর মানভঞ্জনে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন সৌগতবাবু। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরও আশা ছাড়ছেন না তিনি। বিদ্রোহী নেতার উদ্দেশে বার্তা দিয়ে তৃণমূল বিধায়ক ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, শুভেন্দু থেকে গেলে খুশি হব।
বৃহস্পতিবার হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্সের চেয়ারম্যান পদের পর শুক্রবার হলদিয়া ডেভলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বও ছাড়েন শুভেন্দু । সেইসঙ্গে ইস্তফা দেন পরিবহণ ও সেচমন্ত্রী হিসেবেও। শুভেন্দুর পরপর পদক্ষেপে তাঁকে ঘিরে জল্পনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। এখন রাজনৈতিক মহলে যে প্রশ্নগুলো জোরাল হয়ে উঠেছে, তা হল খুব শীগগির কি তৃণমূলের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন করবেন তিনি? তারপর কি পা বাড়াবেন অন্য দলের দিকে? দিলীপবাবু বলেছেন, তৃণমূলের শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। যার যার স্তরে যোগাযোগ রাখছেন। আসতে চাইলে সমাদরে নেব। সৌমিত্র খাঁ-রা এসেছে। কেউ থাকবে না!
শুভেন্দু কি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যেতে পারেন? ৮ ও ৯ ডিসেম্বর কলকাতায় থাকবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। তিনি ফেরার ৭ দিন পর রাজ্যে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তখন কি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু? সেই জল্পনাও শুরু হয়ে গেছে বিভিন্ন মহলে। রাজ্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর ভবিষ্যদ্বাণী, ১৫ দিনে সরকার সংখ্যালঘু হয়ে যাবে এই সরকার!
শুভেন্দুকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে নিশানা করেছে সিপিএম, কংগ্রেস। তবে সৌগতবাবু যেমন শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তেমনই দলের আরেক সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আক্রমণ জারি রেখেছেন। শুধু মন্ত্রিত্বের লোভ, হিম্মত থাকলে ছেড়ে দিয়ে চলে যাও! কয়েকদিন আগেই বলেছেন তিনি।
মন্ত্রিত্ব এবং এইচআরবিসি, এইচডিএ-র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছেড়ে শুভেন্দু এই আক্রমণেরই জবাব দিলেন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। তাঁর পরিবার সূত্রে দাবি, অনেকগুলি পদে থাকায় তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছিল। সেই কারণেই তিনি পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।