সমীরণ পাল, বারাসাত: ডেন্টাল সার্জনরা মুখগহ্বর নিয়ে কাজ করেন৷ করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরা সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন ৷ তাদের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে ৷ এমনটাই জানালেন ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা ৷ গত ২৫ তারিখ থেকে উত্তর ২৪ পরগনার ১৭১ জন ডেন্টাল চিকিৎসকদের এই ভ্যাকসিনেশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৷ ইতিমধ্যেই ১২১ জন ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছেন ৷ ওই চিকিৎসকদের ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি ভ্যাকসিন যে নিরাপদ, তার প্রচারও চালানো হচ্ছে ৷ তাঁদের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে মুখগহ্বর নিয়ে চিকিৎসকরা কাজ করেছেন, তা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ৷ রাজ্য সরকার তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার স্বীকৃতি দিয়েছে, সেই কারণে রাজ্য সরকারকে বারবার ধন্যবাদও জানাচ্ছেন ডেন্টাল সার্জনরা। বারাসাত সদর হাসপাতালে পিপি ইউনিট, আইএমএ ভবন এবং বারাসাত পৌরসভার এক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই টিকাকরণের প্রক্রিয়া চলছে ।
ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলা সম্পাদক ডা:সুমিত কুমার সাহা বলেন, ‘‘সমস্ত প্রথম সারির কোভিড যোদ্ধা তথা রাজ্যবাসীর কাছে আমাদের আবেদন কোভিড ভ্যাকসিন নিরাপদ, সবাই সরকারের এই পদক্ষেপকে বাস্তবায়িত করতে সরকারকে সহযোগীতা করুন।সেই সঙ্গে আমাদের আবেদন, ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলেও শারীরিক দুরত্ব এবং হাত ধোওয়ার অভ্যাস বজায় রাখুন।’’
দাঁতের যন্ত্রণা-অসুখের পাশাপাশি নাক-কান-গলা ও চোখের ডাক্তাররা যেহেতু রোগীর মুখের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করেন তাই কোভিড-১৯ (COVID-19) সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই গত কয়েক মাসে চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন। করোনা সংক্রমণের ভয়ে দন্ত চিকিৎসকরা হাত তুলে নেওয়ায় দাঁতে গর্ত হওয়া রোগীদের রুট ক্যানেল বন্ধ হওয়ায় চরম দুর্ভোগে বিভিন্ন সময়ে পড়েছেন অনেকেই। তামাকজাতীয় পণ্য ব্যবহারে মুখের আলসার (ক্যানসারে প্রথম ধাপ, মাড়ি ফুলে যাওয়া, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, দাঁতের নিচে বা মাড়িতে টিউমার হওয়ার ঘটনায় কষ্ট পাওয়া রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। কিন্তু মুখের কাছে নিজের চোখ রেখে চিকিৎসা করার ঝুঁকি নিচ্ছেন না অধিকাংশ ডেন্টাল সার্জন। তবে ধীরে ধীরে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই অন্যরকম ৷ ফের চেম্বার খুলছেন দন্ত চিকিৎসকরা ৷ দাঁতের চিকিৎসাও তাই সম্ভব হচ্ছে ৷