কলকাতা: বিশ্বের ১৭ লাখের বেশি মানুষ এখন করোনা আক্রান্ত। প্রাণ হারিয়েছেন এক লাখের বেশি মানুষ, সংখ্যাটা শেষ পর্যন্ত কোথায় থামবে বলতে পারছেন না কেউ।  তবে সুস্থও হয়েছেন ৪ লাখের কাছাকাছি রোগী। ভারতে এখনও পর্যন্ত ৭,৪৪৭ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, ২৩৯ জনের প্রাণ গিয়েছে। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৪৩ জন।


কিন্তু একবার যাঁর করোনা পজিটিভ এসেছে, তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কতটুকু? চিনের ইউহান শহর হল করোনার ভরকেন্দ্র। চিনে করোনা রোগী তখনই সেরে উঠেছেন মানা হয়, যখন তাঁর পর পর  তিনদিন জ্বর না আসে ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নেওয়া দুটি নমুনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হয়। এঁদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, বলা হচ্ছে, নিজের বাড়িতে ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকতে। মাস্ক পরারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বলা হচ্ছে, দ্বিতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে মেডিক্যাল চেকআপ করাতে।

ভারতে এই নিয়ম তৈরি করেছে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল। এনসিডিসি-র নিয়ম অনুযায়ী কোনও রোগীর করোনা টেস্ট নেগেটিভ এলে তাঁর শারীরিক অবস্থার প্রেক্ষিতে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া যেতে পারে। এ জন্য তাঁকে নিতে হয় চেস্ট রেডিওগ্রাফিক ক্লিয়ারেন্স, অর্থাৎ দেখা হয়, তাঁর বুকে সংক্রমণ আছে কিনা। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁর দুটি  নমুনা পরীক্ষা হয়। দুটি নমুনারই ফল নেগেটিভ এলে তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন। তবে কাউকে কাউকে চিকিৎসক ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলেন। শারীরিক অবস্থা বিচার করে বাড়িতে কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলা হয় অন্যদের।

ভারত ও চিনের পাশাপাশি বিশ্বের অন্য়ান্য দেশগুলিতেও এভাবেই ছেড়ে দেওয়া হয় করোনায় ভোগা রোগীদের। ইতালিতে যদি কোনও রোগীর শরীরে আর করোনার লক্ষণ না দেখা যায় ও ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নেওয়া নমুনার ফল নেগেটিভ আসে, তবে ঘরে যেতে পারেন তিনি। যদি কেউ ৭ দিন বা তার আগেই ঠিক হয়ে যান, তবে ৭ দিন পর ফের তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়। তখনও রিপোর্ট নেগেটিভ এলে মানা হয়, তিনি করোনা নেগেটিভ।

সিঙ্গাপুরে যাঁদের ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত জ্বর আসে না ও ২৪ ঘণ্টা ব্যবধানে নেওয়া নমুনার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তাহলে হাসপাতাল তাঁকে ডিসচার্জ করে দেয়। তবে ডিসচার্জ হওয়ার পরেও হাসপাতাল থেকে রোজ তাঁর কাছে ফোন আসে, ফোনে তিনি নিজের শরীরের ব্যাপারে জানান। আবার আমেরিকায় ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে রোগীর নাক ও গলার নমুনা নেওয়া হয়। যদি চারটি নমুনাই নেগেটিভ আসে, রোগীর জ্বর না থাকে, কোনওরকম শারীরিক সমস্যা না থাকে, তবে তাঁকে বাড়ি যেতে দেওয়া হয়।

চিনে অবশ্য নতুন করে করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। ইউহানে লকডাউন উঠে গেলেও ঠিক হয়েছে, যাঁরা করোনা থেকে সেরে উঠেছেন, ফের তাঁদের মেডিক্যাল চেকআপ হবে। তাঁর শারীরিক নমুনা নেওয়া হবে, চিকিৎসকদের দল তাঁর বাড়ি এসে পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন। যাঁরাই করোনা পজিটিভ ছিলেন কিন্তু পরে নমুনা নেগেটিভ ধরা পড়েছে, তাঁদের প্রত্যেককে নিজের বাড়িতে ১৪ দিন সেলফ আইসোলেশনে থাকতে হবে।  সংক্রমণের প্রথম দিকে যাঁদের শরীরে করোনার অল্পস্বল্প লক্ষণ দেখা দিয়েছিল, তাঁদের ব্য়াপারেও তদন্ত করছে চিন।