মুম্বই: দর্শকদের কাছে অত্যন্ত সমাদৃত হয়েছে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের শেষ ছবি দিল বেচারা। তাতে দেখাচ্ছে, সুশান্ত ও তাঁর নায়িকা সঞ্জনা সাঙ্গী দু’জনেই দু’ধরনের ক্যানসারে ভুগছেন। সুশান্তের চরিত্রের নাম ম্যানি, তিনি অস্টিওসারকোমার রোগী। অনেকেই জানতে চাইছেন, এই রোগ আসলে কী।


আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি জানাচ্ছে, হাড় সংক্রান্ত সব ক্যানসারের মধ্যে অস্টিওসারকোমাই সব থেকে বেশি দেখা যায়। যে কোনও বয়সের যে কোনও মানুষের এই রোগ হতে পারে, তবে সব থেকে বেশি দেখা যায় শিশু ও কিশোর কিশোরীদের মধ্যে। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। জন হপকিন্স মেডিসিন বলছে, অস্টিওসারকোমা হাড়ের অস্টিওব্লাস্ট কোষে সাধারণত দেখা যায়। এর ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাঁটুর ওপরের লম্বা হাড়গুলি। এ ছাড়া পায়ের ওপরের অংশে, অথবা জানুতে, পায়ের নীচের অংশে, হাতের ওপরের দিকে এই রোগ দেখা দিতে পারে। এছাড়া কাঁধ, মাথার খুলিতে হওয়াও বিচিত্র নয়।

এই কোষ দেখতে হয় সবে তৈরি হতে থাকা হাড়ের কোষের মত। এই কোষ নতুন টিস্যুও তৈরি করে। কিন্তু অস্টিওসারকোমার তৈরি করা বোন টিস্যু সাধারণ হাড়ের মত শক্তিশালী হয় না। শরীরের যে সব অংশে হাড় দ্রুত গঠিত হয় সে সব অংশে এই ক্যানসার দেখা যায়। হাঁটুর আশপাশে, জানুর নীচের দিকে বা জঙ্ঘার ওপরের দিকে দেখা দেয় টিউমার। তবে এটা শিশু ও অপেক্ষাকৃত অল্পবয়স্কদের ক্ষেত্রে, যাঁরা বয়স্ক, তাঁদের শরীরের যে কোনও হাড়েই অস্টিওসারকোমা হতে পারে। তারপর ছড়িয়ে পড়ে শরীরের অন্যত্র।

তিনভাগে এই রোগকে ভাগ করা যায়- হাই গ্রেড, ইন্টারমিডিয়েট গ্রেড ও লো গ্রেড। টিউমার পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা বোঝেন, ক্যানসার শরীরের অন্যত্র কতটা ছড়িয়েছে। হাই গ্রেড অস্টিওসারকোমা বাড়ে সব থেকে দ্রুত। অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে এই কোষকে সাধারণ হাড়ের কোষ বলে মনে হয় না। দেখা যায়, বহু কোষ ভেঙে গিয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন কোষ। ইন্টারমিডিয়েট গ্রেড অস্টিওসারকোমার চিকিৎসা চলে লো গ্রেডের মতই। লো গ্রেড অস্টিওসারকোমায় টিউমারগুলি দেখতে হয় সাধারণ হাড়ের মত, কোষ ভাঙেও কম।

অস্টিওসারকোমার লক্ষণ হল, আক্রান্ত হাড়ে ব্যথা ও ফুলে যাওয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যথা বাড়ে, কাজকর্ম করলে আরও বেড়ে যায়। পায়ের হাড়ে হলে প্রায়ই খুঁড়িয়ে চলতে হয়। এই অসুখ বাড়াবাড়ি রকম ছড়িয়ে গেলে হাড় ভেঙেও যেতে পারে। তখন অসহ্য যন্ত্রণা হয়।