নয়াদিল্লি: নিজেকে মুঘল সম্রাটদের উত্তরাধিকারী বলে দাবি করে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণে ব্যবহারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে এক কেজি ওজনের সোনার ইট তুলে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন প্রিন্স ইয়াকুব হবিবুদ্দিন তুসি নামে জনৈক ব্যক্তি। গত বছরও তিনি খবরে এসেছিলেন অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের কেয়ারটেকার হিসাবে তাঁকে নিয়োগের দাবি তুলে।


ঘটনাচক্রে বাবরি মসজিদ যে জমির ওপর দাঁড়িয়েছিল, তার মালিকানা ঘিরে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সেই জমি সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট যাতে সেখানে রামমন্দির তৈরি হতে পারে। আগামী ৫ আগস্ট বেলা সওয়া বারোটার ‘শুভ মূহূর্তে’ মন্দির নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তার প্রাক্কালে তুসি বলেছেন, এটা আনন্দের কথা যে, ১০০ কোটির ওপর হিন্দুর বিশ্বাস, আবেগের সঙ্গে জড়িত বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে মিটে গিয়েছে। আমার হিন্দু ভাইদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই, ১ কেজি ওজনের যে সোনার ইট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সেটা তৈরি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছি যাতে সেই সোনার ইট তাঁর হাতে তুলে দিতে পারি।

বাবরি মসজিদ-রামজন্মভূমি বিতর্কে বহু মানুষের এহেন দৃঢ় বিশ্বাসের কথা শোনা গিয়েছে যে, মসজিদ গড়তে অযোধ্যায় মন্দির ভেঙেছিল মুঘল শাসকরাই। সেই প্রেক্ষাপটেই তুসির ঘোষণা অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ।

গত বছর বিজেপির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা সহ ক্ষমতায় ফেরার পর নভেম্বরে শতবর্ষ পুরানো বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত জমি হিন্দুদের হাতে তুলে  দিতে বলে, মুসলিম পিটিশনারদের বিকল্প জায়গায় ৫ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

৫ আগস্টের প্রস্তাবিত শিলান্যাস, ভূমিপূজা অনুষ্ঠানে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের হাজির থাকার কথা। রামমন্দির আন্দোলনের প্রবক্তা প্রবীণ লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীও থাকতে পারেন।

এদিকে মন্দির নির্মাণের পরিচালনা ও  দেখভালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত রামমন্দির ট্রাস্টের সদস্য তথা উদুপির পেজাওয়ার মঠের প্রধান বিশ্বপ্রসন্ন তীর্থ স্বামী জানিয়েছেন, রামমন্দির নির্মাণে যে কোনও ধর্ম, সম্প্রদায়ের মানুষ ডোনেশন দিতে পারবেন। শুধু হিন্দু নয়, সব সম্প্রদায় থেকে তাঁরা আর্থিক সহায়তা নেবেন কিনা, প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ভগবান রামের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস আছে, এমন প্রত্যেকের কাছ থেকে, তিনি যে ধর্মের হোন না করেন, আমরা ডোনেশন গ্রহণ করব। ট্রাস্ট আগে ইঙ্গিত দিয়েছিল, তারা সরকারের কাছে অর্থ চাইবে না, দেশবাসীর কাছ থেকে ডোনেশন চেয়ে প্রচার চালাবে। ওই ধর্মগুরুই  জানিয়েছিলেন, ট্রাস্টের শেষ বৈঠকে দেশের প্রতিটি বাড়ি থেকে ১০০ টাকা ও মাথাপিছু ১০ টাকা করে চাঁদা তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বলেছিলেন,  এটা প্রস্তাব। কর চাপিয়ে দেওয়া নয়। যারা মন্দির নির্মাণ সামিল হতে আগ্রহী, তাদের কাছে রোডম্যাপের মতো।