Whatsapp: বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ (Whatsapp)। ছবি, ভিডিও, অডিও এবং মেসেজ পাঠানোর সহজ মাধ্যম হল হোয়াটসঅ্যাপ। এবার এই অ্যাপের সাহায্যেই এক চিকিৎসক সফলভাবে একটি বাচ্চার ডেলিভারি অর্থাৎ জন্মানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পেরেছেন। জানা গিয়েছে, এই ঘটনা ঘটেছে জম্মু-কাশ্মীরে (Jammu and Kahsmir)। এই ঘটনা হওয়ার পর বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এতদিন বিভিন্ন কাজে হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার জানা গিয়েছিল। এবার মেডিক্যাল এমার্জেন্সি পরিস্থিতিতেও এই অ্যাপ সাহায্য করতে পারবে।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, এক অন্তঃসত্ত্বা একটি প্রত্যন্ত এলাকায় আটকে পড়েছিলেন। সেই সময়েই শুরু হয় প্রসব বেদনা। এর আগেও প্রসব সংক্রান্ত বেশ কিছু জটিলতা ধরা পড়েছিল। ফলে স্বভাবতই চিন্তায় পড়ে যান তিনি। সেই মূহুর্তেই তাঁর মেডিক্যাল সাপোর্টের প্রয়োজন হয়েছিল। জম্মু কাশ্মীরের কারেন এলাকায় আটকে পড়েছিলেন ওই মহিলা। ওই অন্তঃসত্ত্বাকে এয়ারলিফট করে অর্থাৎ আকাশপথে উড়িয়ে হাসপাতালে আনার চেষ্টাও করা হয়েছিল। কিন্তু প্রবল তুষারপাতের কারণে সেটাও সম্ভব হয়নি। প্রবল তুষারপাতের কারণে এয়ারলিফটিংয়ের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। এদিকে সফলভাবে ওই মহিলার ডেলিভারিও হতে হবে। সেই জন্য বিকল্প রাস্তা ভাবতে শুরু করেন চিকিৎসকরা।
এরপর হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে পাওয়া যায় সমাধান। জম্মু কাশ্মীরে ক্রালপোড়া এলাকার ব্লক মেডিক্যাল অফিসার মীর মহম্মদ শফি এই অসাধ্য সাধন ঘটিয়েছেন। জানা গিয়েছে, যে অঞ্চলে ওই অন্তঃসত্ত্বা আটকে পড়েছিলেন সেখানে অর্থাৎ কারেন অঞ্চলের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় মহিলাকে। আগে থেকেই বেশ কিছু জটিলতা ছিল ওই মহিলার প্রেগন্যান্সিতে। ফলে তৎক্ষণাত সমস্যার সমাধান হওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সবরকমের সুবিধা পাওয়া সম্ভব নয়। ভাল পরিষেবার জন্য মহিলাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তুষারপাতের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
জম্মু কাশ্মীরের কুপওয়াড়া জেলায় রয়েছে এই কারেন এলাকা। প্রবল তুষারপাতের কারণে বাকি জেলা থেকে একদম বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এই অঞ্চল। সব রাস্তা বন্ধ থাকায় অবশেষে ওই অন্তঃসত্ত্বাকে সবচেয়ে ভাল পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রযুক্তির উপরেই নির্ভর করেছিলেন চিকিৎসকরা। হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমেই মহিলাকে সবটা বুঝিয়ে দিতে থাকেন চিকিৎসকরা। প্রায় ৬ ঘণ্টা প্রসব যন্ত্রণা সহ্য করার পর এক সুস্থ কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন এই মহিলা। ডক্টর শফি জানিয়েছেন, আপাতত বাচ্চাটি এবং তার মাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁরা দুজনেই সুস্থ রয়েছেন।
সোশাল মিডিয়ায় এই ঘটনা ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে। নেটিজেনদের অনেকেই বলছেন এই ঘটনা 'থ্রি ইডিয়টস' ছবির কথা মনে করাচ্ছে। অনেকে আবার বলেছেন প্রত্যন্ত এলাকায় মেডিক্যাল এমার্জেন্সির ক্ষেত্রে ভাল পরিষেবা দেওয়ার জন্য এবার থেকে প্রযুক্তির উপরেও ডাক্তারদের নির্ভর করা উচিত।
আরও পড়ুন- ড্রোনে করে বাড়িতে এল পেনশন! পঞ্চায়েত প্রধানের উদ্যোগে খুশি বিশেষভাবে সক্ষম গ্রাহক