নয়াদিল্লি: কোন দেশ আগে করোনা টিকা তৈরি করবে তা নিয়ে চলছে কাড়াকাড়ি। সবাই চাইছে, তারা অন্যকে হারিয়ে আগে টিকা বানিয়ে ইতিহাসে নাম তুলবে। আর এই ভ্যাকসিন ন্যাশনালিজম ঢিমে করে দিয়েছে করোনা রোখার চেষ্টা। বললেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-র ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘেব্রেসিয়াস।


টেড্রোস বলেছেন, ৭৮টি অতি উচ্চ আয়ের দেশ করোনা টিকা তৈরিতে হু-র প্রকল্প কোভ্যাক্স গ্লোবাল ভ্যাকসিন অ্যালোকেশন প্ল্যানে যোগ দিয়েছে, সব মিলিয়ে এতে অংশ নিয়েছে ১৭০টি দেশ। সংখ্যাটি বাড়ছে। এর ফলে এই দেশগুলি টিকা সম্পর্কিত বিশ্বের বৃহত্তম পোর্টফোলিও ব্যবহার করতে পারবে। এই মুহূর্তে ৯টি সংস্থা টিকা তৈরির চেষ্টা করছে, আরও ৪ জনের প্রচেষ্টা আশাব্যঞ্জক। কিন্তু আমেরিকার মত কিছু দেশ হু-কে পাশ কাটিয়ে দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে টিকা আমদানির ব্যবস্থা করছে, তারা কোভ্যাক্স প্রকল্পে যোগ দেবে না।
জেনেভায় হু-র এক সভায় কোনও দেশের উল্লেখ না করে টেড্রোস বলেছেন, টিকা তৈরি নিয়ে যে জাতীয়তাবাদ তৈরি হয়েছে, তা করোনার জীবন আরও দীর্ঘ করবে, কমাবে না। যদি কার্যকর কোনও টিকা প্রকৃতপক্ষে তৈরি হয়, তবে প্রথম কাজ হল, সকলের ওপর প্রয়োগ করার আগে প্রতিটি দেশের কয়েকজন করে মানুষকে আগে এই টিকা দেওয়া। স্বাস্থ্যকর্মী, বয়স্ক ও আর্থিকভাবে যাঁরা পিছিয়ে রয়েছেন তাঁদের আগে এই টিকা দেওয়া হোক।

হু-র প্রধান বৈজ্ঞানিক সৌম্যা স্বামীনাথন বলেছেন, ২০২১-এর মাঝামাঝি সময়ে কিছু করোনা টিকা তৈরি হয়ে যাবে, সেগুলি বিভিন্ন দেশে পৌঁছেও যাবে। তাঁর বক্তব্য, এই মুহূর্তে ১৩টি টিকা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে, এটি খুবই আশাব্যঞ্জক, কারণ, সাফল্যের হার ১০ শতাংশ হওয়া মানেই বেশ কিছু টিকা তৈরির পথে এগিয়ে যাওয়া।

যদিও পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষার আগে কোনও টিকাই বিশ্বজুড়ে গ্রাহ্য হওয়া উচিত নয়, জানিয়েছেন স্বামীনাথন। আগে রেগুলেটরদের নিশ্চিত হতে হবে, রাষ্ট্রগুলিকে নিশ্চিত হতে হবে। হু-ও নিশ্চিত হবে, যে ওই টিকা নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার ন্যূনতম পর্যায়গুলি পাশ করেছে। কিছু টিকার ইতিমধ্যেই তৃতীয় দফার পরীক্ষা চলছে, সেগুলির ফল এ বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে আসতে পারে, মন্তব্য করেছেন তিনি।

তবে গণহারে টিকা তৈরিতে অনেকটা সময় লাগবে, স্বামীনাথন মনে করছেন।