নয়াদিল্লি: 'টিকাকরণে অগ্রাধিকার পেয়েছেন বয়স্করা। যাঁদের গোটা জীবনটাই এখনও বাকি সেই ইয়ং জেনারেশনই টিকাকরণে ব্রাত্য।' মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টের একটি পর্যবেক্ষণে উঠে এল এমনই মন্তব্য।


এ দিন দিল্লি হাইকোর্ট বলে, 'কোভিড আক্রান্ত হয়ে একের পর এক যুবক-যুবতী প্রাণ হারিয়েছেন ইতিমধ্যেই। অথচ এই তরুণ প্রজন্মই দেশের ভবিষ্যত, তাঁদেরই প্রথমে টিকাকরণের প্রয়োজন ছিল। এর পরিবর্তে বয়স্ক ব্যক্তি, যাঁরা জীবনের অর্ধেকটাই কাটিয়ে ফেলেছে তাঁরা ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেয়েছেন।'


যদিও এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বিচারপতি এ কথা স্পষ্ট করে জানিয়েছে, 'আদালত কখনই বলছে না যে বয়স্ক ব্যক্তিদের বাঁচার অধিকার নেই। তাঁদের অবস্থানও কোনও ভাবেই অস্বীকার করছে না আদালত।'


মঙ্গলবার বিচারপতি সাংঘির কথায়, 'কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ কম বয়সীদের জন্য ভয়াবহ ছিল কিন্তু তাঁরাই কোনওরকম টিকা পাননি।' কেন্দ্রের টিকাকরণ নীতিতে কার্যত বিরক্তি প্রকাশ করেই বিচারপতির মন্তব্য, 'আমি কেন্দ্রের টিকাকরণ নীতিরর কিছুই বুঝতে পারছি না।' 


বিচারপতি সাংঘি আরও বলেন, 'কেন্দ্র ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের জন্য টিকাকরণ চালুর কথা ঘোষণা করেছে অথচ কেন্দ্রের কাছে ভ্যাকসিন নেই। যখন পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের জোগানই নেই তাহলে কেন ঘোষণা করে বিবৃতি জারি করা হল? ভবিষ্যতের জন্য আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে, অথচ আমরা বর্তমান প্রজন্মকেই সরিয়ে রাখছি।'  এখন পর্যন্ত যে সমস্ত কমবয়সীরা কোভিডে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের কথাও এদিন তুলেছেন বিচারপতি।


তিনি আরও বলেন, 'টিককরণের অগ্রাধিকার দিতে তরুণ প্রজন্মকেই বেছে নেওয়া উচিৎ। কারণ একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধ তাঁর জীবনের বেশিরভাগটাই বেঁচে নিয়েছেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজও তিনি করবেন না।' এরপর যুক্তি দিয়ে বিচারপতির মন্তব্য, 'আসলে সকলকেই বাঁচানো আমার কর্তব্য। তবে যদি দুই প্রজন্মের মধ্যে বেছে নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে সে ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকেই বেছে নেওয়া উচিৎ।'


ভ্যাকসিনের আকাল প্রসঙ্গে কেন্দ্র জানিয়েছিল, 'কেবল ভগবানই আমাদের সাহায্য করতে পারেন।' মন্তব্যের পাল্টা যুক্ততে বিচারপতি বলেন, 'এটা সেই জায়গা, যেখানে আমরা নিজেরা নিজেদের জন্য কাজ না করলে ভগবানও বাঁচাতে পারবেন না।' কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করেই বিচারপতি সংঘি বলেন 'আপনারা কেন লজ্জা পাচ্ছেন? দেশকে এগিয়ে যাওয়ার পথ নির্ধারণ করা সরকারের কর্তব্য। অন্যান্য দেশ এটি করেছে। ইতালিতে বলা হয়েছিল যে বৃদ্ধদের জন্য আমাদের শয্যা নেই'।