ভারতে নিজেদের পরিষেবা বন্ধ করে দিতে বাধ্য দিতে পারে হোয়াটসঅ্যাপ। সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলায় প্রকারান্তরে এমনটাই হুঁশিয়ারি দিল মার্ক জুকারবার্গের সংস্থা মেটা। এই নিয়েই গোটা দিন সংবাদ শিরোনামে হোয়াটস্যাপ। সত্যিই কি ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারে এই মেসেজিং সংস্থা ? কেনই বা সেটা করবে তারা ? আইনের সঙ্গে ঠিক কোনখানে বিরোধ?
ঘটনার মূল সূত্রপাত ২০১৯ সালের একটি নির্দেশ থেকে। ওই নির্দেশ অনুযায়ী সরকারের তরফে মেসেজিং পরিষেবা দেয় এমন অ্যাপগুলিকে শনাক্তকরণ চিহ্ন রাখতে বলা হয়। কে মেসেজ পাঠিয়েছে তা দেখা যাবে ওই চিহ্ন মারফত। কিন্তু কী মেসেজ পাঠিয়েছে তা দেখা যাবে না। এই নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। হোয়াটসঅ্যাপের মূল নীতির সঙ্গে সরাসরি বিরোধ বাধে এই নির্দেশে।
২০২১ সালের আইন
২০২১ সালে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৪(২) ধারায় বলা হয় একই কথা। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সমস্ত প্ল্যাটফর্ম মেসেজিং পরিষেবা দেয়, তাদের বার্তা প্রেরকের তথ্য রাখতে হবে। সরকার বা সরকারি কোনও নির্দেশ এলে সংস্থাকে সেই বার্তা প্রেরকের তথ্য দিতে হবে। আইন হওয়ার জেরেই বিবাদ আরও জোরালো হয়। দিল্লি হাইকোর্টে এই নিয়ে মামলা দায়ের হয়। পিটিশন জমা দেয় হোয়াটসঅ্যাপ। ২০২১ সালের ওই আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মেটা সংস্থা নিজেদের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলে।
কেন আনা হল এই আইন ?
সরকারপক্ষের দাবি, ডিজিটাল দুনিয়ায় অপরাধের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আর এই সমস্যার সমাধান করতেই এই আইন। মেসেজিং অ্যাপের মতো ডিজিটাল দুনিয়া ব্যবহার করে খুন, হুমকি, ধর্ষণের মতো ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। দোষীদের ধরার জন্য এই পরিচয় জানার দরকার। একই সঙ্গে এই অপরাধগুলির জন্য অন্তত পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হবে বলেও জানিয়েছে আইন ।
হোয়াটসঅ্যাপের আপত্তি ঠিক কোনখানে ?
বর্তমানে যে এনক্রিপশন পরিষেবা হোয়াটসঅ্যাপ দেয়, তাতে বার্তা প্রেরক ও গ্রাহকের কোনও তথ্য জানা যায় না। এমনকি কী মেসেজ পাঠানো হয়, তাও জানা যায় না। তাদের পিটিশনে হোয়াটসঅ্যাপ উল্লেখ করে, এই আইন বলবৎ হলে বার্তা প্রেরকের তথ্য অন্য কাজেও লাগানো হতে পারে। এমনকি ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির কাজেও ব্যবহার করা হতে পারে। এই আশঙ্কার কথা জানয়েই নিজেদের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। আপাতত আগামী ১২ অগস্ট এই মামলার শুনানি করা হবে। সেখানেই জানা যাবে হোয়াটসঅ্যাপের ভবিষ্যৎ।
আপনার পছন্দের খবর এবার হোয়াটসঅ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন - Phone Restarting Benefits: সমস্যায় পড়লে তবেই ফোন রিস্টার্ট করেন ? নিয়মিত করলে কী কী উপকার ?