নয়াদিল্লি: মানহানি মামলায় রাহুল গাঁধীর (Rahul Gandhi) জেলে যাওয়ার সাজায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ায় আর কোনও বাধা রইল না কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর। কংগ্রেসের তরফে আগেই সেই নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে। সাংসদ হিসেবের রাহুলের পুনর্বহালের সব কাগজপত্রও মোটামুটি তৈরি বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাতে সই করেননি স্পিকার। তাই সোমবার লোকসভায় রাহুলের প্রত্যাবর্তন ঘটবে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ। (Modi Surname Case)


মণিপুর অশান্তি থেকে হরিয়ানার সাম্প্রদায়িক হিংসা, সংসদের বাদল অধিবেশনে লাগাতার মোদি সরকারকে কোণঠাসা করে আসছেন বিরোধীরা। সোমবার রাহুলের পুনর্বহালও তাঁদের ইস্যুর মধ্যে থাকছে। গুজরাত আদালত রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করার পর যে তৎপরতার সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাহুলের সাংসদ পদ বাতিল করা হয়, সাত তাড়াতাড়ি বাংলো খালি করার নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয়। তাই রাহুলকে পুনর্বহাল করায় গড়িমসি হলে, কড়া অবস্থান নিতে বদ্ধপরিকর বিরোধী শিবির। 


এ নিয়ে ট্যুইট করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তাঁর বক্তব্য, রাহুল গাঁধীর সাজার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পর ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গিয়েছে। লোকসভার সচিবালয় দ্রুত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে, তা কার্যকর করুক। কোন ওরকম বিলম্ব হওয়া অন্যায় এবং তাতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকে অবজ্ঞা করা হয়'।


কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাহুলকে সাংসদ হিসেবে পুনর্বহাল করতে ঢিলেমি দেখলে ফের আইনি রাস্তা ধরবে কংগ্রেস। কারণ এর আগে, জানুয়ারি মাসে লাক্ষাদ্বীপের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির সাংসদ পিপি মহম্মদ ফয়জলের ১০ বছরের সাজা হয়। সেবার তাঁরও সাংসদ পদ চলে যায়। সাংসদ হিসেবে সংসদে ফিরতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সাংসদ পদ ফিরে পেতে প্রায় একমাস লেগে গিয়েছি ফয়জলের। সুপ্রিম কোর্টে শুনানির ঠিক আগে তাঁকে পুনর্বহাল করা হয়।


আরও পড়ুন: Manipur Violence: ঘুমন্ত অবস্থায় গুলি, তার পর তরোয়াল দিয়ে ছিন্নভিন্ন করা হল দেহ, নতুন করে অশান্তি মণিপুরে, পুড়ল ১৫টি বাড়ি


রাহুলের ক্ষেত্রে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন বিরোধীরা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে, কর্নাটকে গিয়ে নীরব মোদি, ললিত মোদিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এক আসনে বসান রাহুল। তিনি মোদি সম্প্রদায়কে অপমান করেছেন বেল অপরাধমূলক মানহানি মামলা দায়ের করেন গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক, যিনি নিজের পদবী পাল্টে মোদি করেছিলেন। চার বছর পর, সেই মামলায় গুজরাতের আদালত রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং দু'বছরের সাজা হয়।  জেরে মানহানির মামলা দায়ের হয় বিরুদ্ধে। গত মে মাসে রাহুলের সাংসদ পদ বাতিল হয়। তার জেরে মে মাসে রাহুলের সাংসদ পদ বাতিল হয়। 


সেই থেকে টানাপোড়েন চলছিল। সম্প্রতি শুক্রবার রাহুলের সেই সাজায় স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মানহানি মামলায় কেন রাহুলকে সর্বোচ্চ সাজা শোনানো হল, গুজরাত আদালত তার কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি বলে জানিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত। তাই গোটা মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রাহুলের সাজায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। আদালত জানায়, সাংসদপদ বাতিল হলে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট ব্য়ক্তির ক্ষতি হয় না, যাঁরা তাঁকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছিলেন, তাঁদের উপরও প্রভাব ফেলে।