10-Hour Work Policy: সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার সরকারি বেসরকারি অফিসে কাজের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৯-১০ ঘণ্টা কাজের মেয়াদ করার বিধান দিয়েছে চন্দ্রবাবু নায়ডুর সরকার। আর এই বিধান দেওয়ার পর থেকেই নানা মহলে ধিক্কার, নিন্দা, সমালোচনার ঝড় চলছে সমাজমাধ্যমে। সরকারি-বেসরকারি কর্মীদের একাংশ প্রকাশ্যে ধিক্কার জানিয়েছেন এই বিধানের। টিডিপি প্রধান অন্ধ্রপ্রদেশের এনডিএ সরকার এবার থেকে বেসরকারি সংস্থা ও কারখানাগুলিকে অনুমতি দেবে দিনে ১০ ঘণ্টা করে কর্মীদের কাজ করানোর নিয়মে। এর আগে ৯ ঘণ্টা কাজের বিধান ছিল আর এবারে সেই কাজের সময় আরও ১ ঘণ্টা বাড়িয়ে দেওয়া হল সরকারি অনুমোদনে।
পিটিআই প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, অন্ধ্রপ্রদেশের তথ্য ও জনসংযোগ মন্ত্রী কে পার্থসারথী জানিয়েছেন, কর্মী এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বজায় রেখে শ্রম আইনকে নতুন করে সংশোধন করতে হবে। যদিও সমাজমাধ্যমে বহু কর্মী তাদের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন যে কীভাবে এই কাজের সময় বাড়িয়ে দেওয়া আমাদের জন্য স্বার্থরক্ষা করতে পারে ? এমনকী এই কাজের সময় বৃদ্ধির বিধান নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের ট্রেড ইউনিয়নগুলিও সরব হয়েছে। তুমুল ধিক্কার চলছে এই বিধানকে ঘিরে।
সমাজমাধ্যমে অনেক ব্যবহারকারী স্পষ্টই জানিয়েছেন যে বর্ধিত কাজের সময় কেবলমাত্র ব্যবসার মালিকদেরই উপকার করবে। কর্মীদের বলিদানে লাভবান হবেন মালিকরা। অনেকেই জানিয়েছেন যে এই বিধানের ফলে সমস্ত বেসরকারি সংস্থাই এবার থেকে দিনে ১০ ঘণ্টা কাজকে বাধ্যতামূলক করে দেবে যা ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্সকে বিঘ্নিত করবে।
এক এক্স হ্যান্ডল ব্যবহারকারী অঙ্কিত লিখেছেন, 'আর্থিক সমৃদ্ধির জন্য ভাল। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের কী হবে ? ১০ ঘণ্টা কাজ, ২ ঘণ্টা যাতায়াত, ৮ ঘণ্টা ঘুম, আর বাকি ৪ ঘণ্টার মধ্যে তোমায় সব কিছু করে নিতে হবে'। সুপ্রিয়া নামের এক ব্যবহারকারী এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, 'অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার কি এবার এটা মনে করছেন যে বেশি সময় কাজ মানে দারুণ প্রোডাক্টিভিটি ? না, এর মানে হল স্পষ্ট ভাষায় শোষণ। বেশি সময় কাজ, আগের মত একই বেতন, খারাপ জীবন। কর্মীদের কি কোনও সম্মান নেই ?'
অনেকেই এমন মন্তব্য করেছেন যে এই কাজের সময় বৃদ্ধির ফলে কর্মীদের নিজেদের পরিবারকে দেওয়ার মত সময়ই থাকবে না। অনেকে আবার এও উল্লেখ করেছেন যে বিশ্বের অন্যত্র যেখানে দিনে ৮ ঘণ্টাই কাজের নিয়ম, সেখানে ভারতে এখনই বহু রাজ্যে, বহু শহরে ১০ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় কাজের বিধান রয়েছে।
এই নতুন বিধানের সপক্ষে সরকারের তরফে তথ্য ও জনসংযোগ মন্ত্রী কে পার্থসারথী বলেছেন যে এই নতুন সংশোধিত শ্রম আইনে নাইট শিফটের ক্ষেত্রে মহিলাদেরও বেশি করে যোগদানের বিধান দেওয়া হয়েছে। আগে যেখানে মহিলাদের নাইট শিফটে কাজ করতে দেওয়া হত না, এবার থেকে তারাও নাইট শিফটে কাজ করতে পারবেন। তবে তাদের জন্য যাতায়াতের সুবিধে, অনুমোদন, নিরাপত্তা এবং নজরদারি বজায় থাকবে।