নয়াদিল্লি: শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি এইচআইভি (HIV) বা এইডস (AIDS) রোগীদের সমাজের বদ্ধমূল কিছু ধারণার সঙ্গেও লড়াই করতে হয়। যা সংশ্লিষ্ট রোগীকে শারীরিকভাবে তো বটেই মানসিকভাবে দুর্বল করে দিতে পারে। বছর পর বছর ধরে এই রোগের সঙ্গে লড়াই করতে করতে বাড়তে পারে এই ধরনের সমস্যাও।
এইচআইভি বা এইডস সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবস (World Aids Day) পালন করা হয়। সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের স্মরণ করা এবং চিকিৎসা পরিষেবা সম্পর্কে নানা তথ্য জানানোর জন্য এই দিন পালিত হয় প্রতিবছর। এইচআইভি বা এইডস নিয়ে অনেক প্রচলিত ধ্যান ধারণা রয়েছে, যার সত্যতা যাচাই করা দরকার। বিশ্ব এইডস দিবসে হায়দরাবাদের যশোদা হাসপাতালের (Yashoda Hospital) চিকিৎসক দিলীপ গুড়ে এমনই কিছু প্রচলিত ধারণা (Myth) ও ফ্যাক্ট (Fact) সম্পর্কে জানালেন।
প্রচলিত ধারণা: এইচআইভি কাশি, স্পর্শ, হাত নাড়ানো ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ায়।
ফ্যাক্ট: যতক্ষণ পর্যন্ত না ত্বকের সঙ্গে ঘর্ষণ হচ্ছে ততক্ষণ সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই।
প্রচলিত ধারণা: এইচআইভি ধরা পড়ার কয়েক মাসের মধ্যে মৃত্যু নিশ্চিত
ফ্যাক্ট: অত্যাধুনিক ওষুধ এবং চিকিৎসার মাধ্যমে কয়েক দশক আয়ু বৃদ্ধি সম্ভব।
প্রচলিত ধারণা: এইচআইভি পজিটিভ মহিলা গর্ভবতী হলে সন্তানও এইচআইভি পজিটিভ হবে
ফ্যাক্ট: অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল চিকিত্সা, এবং সিজারিয়ান পদ্ধতি সহ অন্যান্য সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে নবজাতকদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি ২ শতাংশের কম নামিয়ে আনা যেতে পারে।
প্রচলিত ধারণা: এইচআইভি একটি ভাইরাল রোগ। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের প্রয়োজন নেই।
ফ্যাক্ট: এইচআইভি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এতটাই দুর্বল করে দেয় যে সাধারণ ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক আক্রমণ করতে পারে। CD 4 কাউন্টের উপর ভিত্তি করে প্রফিল্যাকটিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।
প্রচলিত ধারণা: এইচআইভি পজিটিভ রোগীরা ঘনিষ্ঠ হলে কোনও ঝুঁকি নেই।
ফ্যাক্ট: এইচআইভির অনেক স্ট্রেন আছে। সুরক্ষা ছাড়া যৌন সম্পর্ক স্ট্রেনের বিবর্তন ঘটাতে পারে। যা তুলনায় আরও সংক্রামকও হতে পারে।
প্রচলিত ধারণা: কোনও উপসর্গ নেই, ফলে এইচআইভি পজিটিভ না।
ফ্যাক্ট: এইচআইভির উপসর্গ সামনে আসতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। একমাত্র পরীক্ষার মাধ্যমেই নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।
প্রচলিত ধারণা: এমন কিছু ওষুধ আছে যা যৌন সম্পর্কে পর খেলে আগেই প্রতিরোধ করা যায় এইচআইভি।
ফ্যাক্ট: ঝুঁকি শূন্য একেবারেই হয়ে যায় না।
প্রচলিত ধারণা: এইচআইভি সংক্রমিত রোগীর সঙ্গে খাবার, পানীয় এবং রান্নার বাসন ভাগ করে নিলে অন্য জনের এইচআইভি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ফ্যাক্ট: খাবার, পানীয় বা রান্নার পাত্র ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে এইচআইভি ছড়াতে পারে না
প্রচলিত ধারণা: এইচআইভি পোকামাকড় এবং পোষ্যের মাধ্যমে ছড়ায়।
ফ্যাক্ট: এইচআইভি পোকামাকড়, মশা ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়ায় না।
প্রচলিত ধারণা: চিকিৎসা চলছে তাই ভাইরাস ছড়াতে পারব না।
ফ্যাক্ট: এইচআইভি চিকিৎসা ভাইরাস পরিমাণকে নগণ্য পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারে। কিন্তু চিকিৎসা সত্ত্বেও আপনি সংক্রামক হতে পারেন।