নয়াদিল্লি: বিশ্ব ক্ষুধাসূচকে ১০৫তম স্থানে জায়গা পেল ভারত। ১২৭টি দেশকে নিয়ে ২০২৪ সালের ১৯তম বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের রিপোর্ট সামনে এসেছে। তালিকায় পাকিস্তান, আফগানিস্তানের চেয়ে যদিও এগিয়ে রয়েছে ভারত। কিন্তু পড়শি দেশ শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার এবং বাংলাদেশের চেয়ে ভারত পিছিয়ে। শুধু পিছিয়েই নেই, ব্যবধানও অনেকটাই। (World Hunger Index)


পৃখিবীর কত সংখ্যক মানুষের এখনও পর্যাপ্ত আহার জোটে না, কত মানুষ অনাহারে থাকেন, খাদ্যের অধিকার থেকে কত মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন, শরীরে পুষ্টি যাচ্ছে কি না, সেই নিয়েই বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের রিপোর্ট তৈরি হয় প্রতিবছর। ক্ষুধা দূরীকরণে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, ঠিক কোথায় ফাঁস রয়ে যাচ্ছে, তারও বিশদ বর্ণনা থাকে রিপোর্টে। (World Hunger Index 2024)


এবারের সেই ক্ষুধাসূচকে ভারতের স্কোর ২৭.৩। অর্থাৎ ভারতের পরিস্থিতি গুরুতর বলে গন্য হয়েছে। বলা হয়েছে, অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গত কয়েক বছরে বেশ উন্নতি করেছে ভারত। কিন্তু ক্ষুধা নিবারণে এখনও অনেকটা পথ পেরোতে হবে। এর আগে, ২০২৩ সালে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১১১তম স্থানে ছিল ভারত। ২০২৩ সালে ছিল ১০৭তম স্থানে। ২০১৬ সালে ভারতের প্রাপ্ত স্কোর ছিল ২৯.৩। সেই নিরিখে সামান্য উন্নতি ঘটেছে। তবে দেশে ক্ষুধার সমস্যা এখনও বেশ উদ্বেগজনকই।


যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৪ সালের রিপোর্টের সঙ্গে ২০২৩ সালের রিপোর্টের তুলনা চলে না। কারণ সূচকের মাপকাঠিতে বেশ কিছু রদবদল ঘটানো হয়েছে। শিশুদের অপুষ্টি দূর করতেও ভারতকে আরও উদ্যোগী হতে হবে বলে মত তাঁদের। কারণ উচ্চতা অনুযায়ী ভারতীয় শিশুদের ওজন কম, প্রায় ১৮.৭ শতাংশ। বয়স অনুযায়ী ভারতে শিশুদের খর্বাকৃতি হয়ে রয়ে যাওয়ার হার ৩৫.৫ শতাংশ, অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সি শিশুদের মৃত্যুর হার ২.৯ শতাংশ এবং অপুষ্টির হার প্রায় ১৩.৭ শতাংশ।


২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর বুক থেকে ক্ষুধা শূন্যে নামিয়ে আনার সংকল্প গৃহীত হয়েছে। কিন্তু ক্ষুধার হার একই জায়গায় রয়েছে, তাই লক্ষ্যে পৌঁছনো কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পৃথিবীর ১২৭টি দেশের মধ্যে ৪২টি দেশে অনাহারে থাকা মানুষের সংখ্যা এখনও গুরুতর অথবা উদ্বেগজনক। এর জন্য লিঙ্গ বৈষম্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে মূল কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়েছে। 


এ বছরের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নেপাল (৬৮), শ্রীলঙ্কা (৫৬), বাংলাদেশ (৮৪)। অথচ, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ, এই দুই দেশই রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয় সাম্প্রতিক সময়ে।  পাকিস্তান তালিকায় ১০৯তম স্থানে, আফগানিস্তান ১১৬তম স্থানে রয়েছে। তালিকার একেবারে শীর্ষে রয়েছে চিন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কুয়েতের মতো দেশ।