বার্সেলোনা: স্পেনের বার্সেলোনা শহরের একটি জনপ্রিয় রাস্তায় ভিড়ের মধ্যে আচমকা ঢুকে পড়ে বহু মানুষকে ধাক্কা মারল একটি ভ্যান। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। জখম অন্তত ৫০ জন। পুলিশ সূত্রে খবর, ভিড়ে ঠাসা রাস্তায় আচমকা সাদা রঙের ভ্যান নিয়ে হামলা চালায় ২ সশস্ত্র দুষ্কৃতী। তারপরই রেস্তোরাঁয় ঢুকে শুরু করে গুলিবর্ষণ। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। শুরু হয় হুড়োহুড়ি। ওই ভ্যানের চালক ইচ্ছাকৃতভাবে বহু মানুষকে ধাক্কা মেরেছে। সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়ে একটি পানশালায় লুকিয়েছিল। তাকে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটি সন্ত্রাসবাদী হামলা বলেই জানিয়েছে পুলিশ। আরও এক সন্দেহভাজন ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ভ্যান চালকের নাম দ্রিস উকাবির। সে মরক্কোর নাগরিক।


ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ট্যুইট করে বলেছেন, এখনও পর্যন্ত কোনও ভারতীয়র হতাহত হওয়ার খবর নেই। তিনি স্পেনে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। জরুরি প্রয়োজনে ভারতীয়রা +৩৪-৬০৮৭৬৯৩৩৫ নম্বরে ফোন করতে পারেন।


লা রাম্বলা বুলেভার্ড বার্সেলোনার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা। গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে পর্যটক ও পথশিল্পীদের ভিড় থাকে। সেখানেই ভ্যানটি প্রচণ্ড গতিতে ঢুকে পড়ে। লোকজন রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার আগেই জখম হন। এই হামলার পরেই সাধারণ মানুষকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জায়গাটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। মেট্রো ও রেলস্টেশনগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ‘রাস্তা পর্যটকে ঠাসা ছিল। হঠাৎ আমি বিকট শব্দ শুনতে পাই। সবাই আতঙ্কে চিৎকার করতে করতে ছুটতে শুরু করে। পুলিশ অফিসাররা দ্রুত অস্ত্র, ঢাল নিয়ে ছুটে আসেন। তাঁরা সাধারণ মানুষকে সরিয়ে দেন।’ অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ‘ভ্যানটি ভিড়ের মধ্যে এসে ধাক্কা মারার পরেই চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। সবাই ছুটতে শুরু করে দেয়। অনেকেই দোকান, ক্যাফেতে আশ্রয় নেন। আমি আরও অনেকের সঙ্গে একটি গির্জায় গিয়ে আশ্রয় নিই।’

গত বছরের ১৪ জুলাই ফ্রান্সের নিস শহরে একটি ট্রাকের ধাক্কায় অন্তত ৮৬ জনের মৃত্যু হয়। জখম হন ৪৫৮ জন। সেই হামলারই স্মৃতি উস্কে দিল এই হামলা। ২০০৪ সালের মার্চে স্পেনের মাদ্রিদে ট্রেনে বিস্ফোরণে ১৯১ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে লা রাম্বলার কাছেই একটি হোটেলের বাইরে বন্দুকবাজের গুলিতে দু জন জখম হন। ২০১৫ সালের জুন মাস থেকে অন্তত ১৮০ জন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে স্পেনের পুলিশ। কিন্তু তাতেও জঙ্গি হামলা ঠেকানো যাচ্ছে না।