লাহোর: পাকিস্তানে খোঁজ মিলছে না দিল্লির হজরত নিজামুদ্দিন দরগার যে দুই মৌলবীর, তাঁদের মুত্তাহিদা কউমি মুভমেন্ট (এমকিউএম)-এর সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগে হেফাজতে নিয়েছে পাক গুপ্তচর এজেন্সি। ১৪ মার্চ লাহোরের আল্লামা ইকবাল বিমানবন্দরে করাচিগামী শাহিন এয়ারলাইন্সের বিমান থেকে তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন তাঁদের হেফাজতে নেয়। দুজনকে অজ্ঞাত স্থানে পাঠানো হয়। করাচির মোহাজির সংগঠন এমকিউএমের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে সন্দেহে জেরা করা হচ্ছে দুজনকে। সূত্রের খবর, অভিযোগ প্রমাণিত না হলে ছেড়ে দেওয়া হবে ওঁদের।

করাচিতে গত বছর অনশন অবস্থান ক্যাম্পে পাকিস্তান-বিরোধী মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে এমকিউএম নেতা আলতাফ হুসেনের বিরুদ্ধে। হুসেন লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন। পাকিস্তানের অভিযোগ, সেখান থেকে দেওয়া তাঁর ভাষণে প্ররোচিত হয়ে এমকিউএম ক্যাডাররা মিডিয়া অফিসে হামলা চালায়।  পাল্টা রাষ্ট্রদ্রোহিতায় অভিযুক্ত করা হয় হুসেনকে।

১৯৪৭-এ দেশভাগের সময় ভারত ছেড়ে পাকিস্তান চলে যাওয়া উর্দুভাষী লোকজন সিন্ধের নানা জায়গায়, মূলত করাচি, হায়দরাবাদ, মীরপুরখাস, সুক্কুরে বসতি গড়েছিলেন। আশির দশকে তাদের সংগঠন এমইউএম সেখানকার রাজনীতিতে দাপুটে শক্তি হয়ে ওঠে।

৮০ বছর বয়সি আসিফ নিজামি হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগার প্রধান মৌলবী। গত ৮ মার্চ ভাগ্নে নাজিম আলি নিজামিকে নিয়ে তিনি করাচিতে বোনকে দেখতে যান। ১৩ মার্চ লাহোর পৌঁছে দুজনে পাকপাট্টানে সুফি সন্ত বাবা ফরিদ গ্যাং-এর সৌধে যান। ১৪ তারিখ থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁদের।
ভারতের তরফে এ ব্যাপারে সরকারিভাবে অবগত করা হয় পাকিস্তানকে। দুজনের ব্যাপারে আপডেট চেয়ে পাঠানো হয়। তাঁদের নিরাপদে উদ্ধারের দাবি জানায় নয়াদিল্লি। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ট্যুইট করে বলেন, করাচিতে ওঁদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি আমরা। মনে হচ্ছে, আত্মীয়স্বজনদের চাপ দিয়ে বলা হচ্ছে, তাঁরা যেন ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে কথা না বলেন। আমি লাগাতার আমাদের হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তবে ওই দুজন কোথায়, সে ব্যাপারে কোনও সরকারি ভাষ্য মেলেনি।

যদিও গতকালই পাক বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া জানান, নিখোঁজ দুই ভারতীয় মৌলবীর উধাও হয়ে যাওয়ায় ব্যাপারে কোনও সূত্রই নেই তাঁদের হাতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে তাঁরা সক্রিয় হয়ে খোঁজখবর করছেন, সংশ্লিষ্ট সকলকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছেন।