কাবুল : ২০ বছর পর আফগানিস্তানে ফের তালিবান রাজত্ব। তালিবানদের ঘোষণা, এবার থেকে দেশের নাম হবে ইসলামিক এমিরেটস অফ আফগানিস্তান। রবিবার পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। রক্তক্ষয় এড়াতেই পদত্যাগ বলে দাবি করেছেন তিনি। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রীও।
রবিবারই রাষ্ট্রপতি ভবনের দখল নেওয়ার পরেই কাবুলে বিস্ফোরণ হয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় অসামরিক উড়ান চলাচল। তালিবানরা কাবুল কবজা করার পরেই দেশ ছাড়েন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। দূতাবাসের কর্মীদের ফেরানোর কাজ শুরু করেছে আমেরিকা, সুইৎজারল্যান্ড-সহ একাধিক দেশ। কাবুলে জারি হয়েছে কার্ফু।
কাবুলের রাস্তায় ফের তালিবানি আতঙ্ক! রবিবার সকালে দক্ষিণের জালালাবাদ দখল নেওয়ার পর, দুপুরের মধ্যে বিনা যুদ্ধে কাবুল দখল করে নেয় তালিবান। আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনীর সেনা সরতেই, গত দেড়মাসে গোটা আফগানিস্তান তালিবানের কব্জায়। গত ১৪ এপ্রিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানোর কথা ঘোষণা করেন। ১মে থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর ঠিক ৩ দিনের মাথায় সক্রিয় হয়ে ওঠে তালিবান। ৪ মে, হেলমন্দ প্রদেশ-সহ ৬ জায়গায় আফগান সেনার ওপর হামলা হয়। এরপর ধীরে ধীরে দক্ষিণ আফগানিস্তানের ট্র্যাডিশনাল স্ট্রংহোল্ড থেকে ক্রমশ আফগানিস্তানের উত্তরাংশের জেলাগুলির দিকে এগোতে থাকে তালিবান যোদ্ধারা। ২ জুলাই, আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটি থেকে সেনা সরায় আমেরিকা। কাবুল থেকে যা মাত্র ১ ঘণ্টা দূরে। এরপর শুরু হয় রক্তক্ষয়ী ক্ষমতা দখলের লড়াই।
৪ জুলাই তালিবানের তাড়া খেয়ে প্রায় কয়েক হাজার সেনা ঢুকে পড়ে প্রতিবেশী তাজিকিস্তানে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে অগাস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের ৬৫ শতাংশই তালিবানের দখলে চলে যায়। ২৬টি প্রদেশের রাজধানী তালিবানের দখলে। ১০ অগাস্ট পশ্চিম আফগানিস্তানের রাজধানী ফারাহ্, মধ্য আফগানিস্তানের বাঘলানের পুল এ কুমরি চলে যায় তালিবান কব্জায়। এর ঠিক ৩ দিনের মধ্যেই গজনি, হেরাত, কুন্দুজ এবং কন্দহরও দখল করে নেয় তালিবান। কাবুল দখলের পর তালিবানের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, তারা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর চায়। কাবুলের বাগরাম বায়ুসেনা ঘাঁটির জেল থেকে হাজারখানেক তালিবান বন্দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে রবিবার দিনভরই কাবুলের বিভিন্ন জায়গা থেকে গুলির শব্দ মিলেছে।