কাবুল : তালিবানরা আফগানিস্তানের কাবুল দখল করার পর থেকেই অশান্ত হয়েছে আফগানিস্তান। দেশ ছেড়ে পালিয়েছে কয়েক লক্ষ লক্ষ আফগান। এখনও আফগানভূম ছাড়তে চাইছে আফগান এবং বিদেশি নাগরিকরা। এই অশান্ত পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি ফল ভুগছে সেদেশের শিশুরা, এমনটাই জানাল ইউনিসেফ। 


এখনও পর্যন্ত সেখানে ৫৫০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১ হাজার ৪০০ জন। ইউনিসেফের তরফে বলা হয়েছে আফগান শিশুদের জীবনদায়ী ভ্যাকসিনও পাচ্ছে না। এর ফলে আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যেতে পারে তাঁরা। শিশুদের জন্য কাজ করা বিশ্বের এই সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে আফগানিস্তানে এক কোটি শিশুরা এখন মানবিক সাহায্যের অপেক্ষায় রয়েছে। 


ইউনিসেফের একজিকিউটিভ ডিরেক্টর হেনরিয়েট্টা এইচ ফোর জানিয়েছেন, ‘‌আফগানিস্তানে এক কোটি শিশু মানবিক সাহায্যের অপেক্ষায় রয়েছে। গত এক বছর ধরে সেদেশে চালমাটাল অবস্থার জন্য অপুষ্টিতে ভুগছে ১০ লক্ষ শিশু। বিনা চিকিৎসাতেই যে কোনও সময় মারা যেতে পারে তারা।’‌


যে পরিসংখ্যান হেনরিয়েট্টা প্রকাশ করে বিবৃতিতে তা উল্লেখ করে বলেছেন, ৪২ লক্ষ শিশু সেদেশে এখন স্কুলছুট। তাদের মধ্যে ২২ লক্ষ মেয়ে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে চার লক্ষ ৩৫ হাজার শিশু এবং নারী অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। হেনরিইয়েট্টা বলেন, ‘আফগানিস্তানে বর্তমানে শিশুরা নানা জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে। আমরা অনুমান করছি, সামনের দিনগুলোতে দেশটির নারী ও শিশুদের আরও বেশি মানবিক সহায়তার প্রয়োজন হবে।’


মার্কিন সেনা কাবুল ছাড়ার দিনই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে আফগানিস্তান নিয়ে প্রস্তাব পাশ হল।  ১৩টি রাষ্ট্রের সমর্থনে পাশ হয়েছে প্রস্তাব। চিন ও রাশিয়া ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি। তবে প্রস্তাবের বিপক্ষে কোনও ভোটও পড়েনি।  প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যে আফগান বা বিদেশি নাগরিকরা কাবুল ছাড়তে চাইছেন, তাঁদের নিরাপদে আফগানিস্তান ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।  মহিলা, শিশু ও সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে প্রস্তাবে।


বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা জানান, প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের মাটিকে অন্য দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী হামলা ও জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার কাজে ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। অগস্টে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পৌরহিত্যর দায়িত্ব ছিল ভারতের।  এই প্রস্তাব পাশের সময় রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে পৌরহিত্য করেন বিদেশ সচিব শ্রিংলা।