কাবুল: ২০ বছরের যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসান। নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই আফগানিস্তানের মাটি ছাড়ল মার্কিন সেনা। 


পেন্টাগন জানিয়েছে, সময়সীমার একদিন আগে, অর্থাৎ ৩০ অগাস্ট সব মার্কিন সেনাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।  শেষ সৈনিক হিসেবে সি-১৭ বিমানে ওঠেন মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনাহিউ।  


গতকাল পাঁচটি বিমানে করে আফগানিস্তানে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর শেষ ব্যাটালিয়ন আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছে। মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, মার্কিন এবং আফগানদের বের করে আনার জন্য আমেরিকা চেষ্টা অব্যাহত রাখবে এবং আফগানিস্তানের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কাজ করবে। কাবুল বিমানবন্দর পুনরায় চালু হওয়ার পর সেখানে চার্টার্ড ফ্লাইটের মাধ্যমে তাঁদের প্রস্থান নিশ্চিত করবে।


মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি গতকাল আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শেষ করার কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, "আমি এখানে আফগানিস্তান থেকে আমাদের সেনা প্রত্যাহারের সমাপ্তির ঘোষণা করছি। একইসঙ্গে আমেরিকান নাগরিক, তৃতীয় দেশের নাগরিক এবং বিপন্ন আফগানদের সরিয়ে নেওয়ার মিশনের সমাপ্তি ঘোষণা করছি। হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শেষ সি-১৭ বিমান ৩০ আগস্ট আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দেয়। 


ম্যাককেঞ্জি আরও জানান, কূটনৈতিক অভিযান অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্রের দাবি, প্রায় দুশো জন মার্কিন নাগরিক ও আফগানিস্তানের অসংখ্য মানুষ কাবুল ছাড়তে পারেননি।  পেন্টাগনের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানে আমেরিকার আর কোনও কূটনৈতিক প্রতিনিধি নেই।  ওই অফিস কাতারের দোহায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরবর্তী স্তরে দোহা থেকেই কাবুলের সঙ্গে কূটনৈতিক দৌত্য চালানো হবে। 


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ১ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি আমেরিকা, আফগানিস্তান ও অন্য দেশের নাগরিকদের কাবুল থেকে সরানো হয়েছে। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে আমাদের ২০ বছরের সামরিক উপস্থিতি শেষ হয়েছে। "বাইডেন জানিয়েছেন যে, তিনি মঙ্গলবার আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে আমেরিকান জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। 


এদিকে, নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই শেষ মার্কিন সেনা আফগানিস্তানের মাটি ছাড়ায় উল্লাসে ফেটে পড়েছে তালিবান।  শূন্য গুলি ছুড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় অনেককে। কেউ কেউ আবার রকেট ছুড়তে শুরু করে।  কাবুলে ঘনঘন শোনা যায় রকেট ও গুলির শব্দ।  তালিবানরা রাস্তায় বেরিয়ে আনন্দ করতে থাকে।  তালিবানের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের সময় রাত ৯টা নাগাদ শেষ মার্কিন সেনা কাবুল ছেড়ে গেছে।  ফলে আফগানিস্তান এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন। 


অন্যদিকে, মার্কিন সেনা কাবুল ছাড়ার দিনই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে আফগানিস্তান নিয়ে প্রস্তাব পাশ হল।  ১৩টি রাষ্ট্রের সমর্থনে পাশ হয়েছে প্রস্তাব। চিন ও রাশিয়া ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি। তবে প্রস্তাবের বিপক্ষে কোনও ভোটও পড়েনি।