নয়াদিল্লি: অক্ষমের কুৎসিত উল্লাস। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র চন্দ্রযান ২ নিয়ে কটাক্ষ করে নিজেদের অপদার্থতার ঝাল মেটাতে মাঠে নামলেন পাকিস্তানের। চন্দ্রযান ২-র বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে চাঁদের মাটি ছোঁয়ার ২.১ কিমি আগে ইসরোর যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। ইসরোর এই অভিযানের প্রশংসায় সারা বিশ্বই মুখর। শুধু বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে চাঁদের মাটিতে নামার আগে যোগাযোগ ছিন্ন হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও আগামী এক বছর ধরে কক্ষপথে কাজ করবে অরবিটার। তাতেও চাঁদ সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য সামনে আসবে বলে আশাবাদী সকলে। ইসরো জানিয়েছে, এই অভিযান এখনও পর্যন্ত ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই সফল। বিক্রম ল্যান্ডারের চাঁদের বুকে নামার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। আর এই ঘটনা ঘিরেই কুৎসিত ট্যুইট পাকিস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীর। তিনি চন্দ্রযান ২ কে ‘খেলনা’ বলেও কটাক্ষ করেছেন। ভারতের নাম নিয়েও কটাক্ষ করেছেন তিনি।



তবে ফাওয়াদের এই ট্যুইট নিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন এক পাক ট্যুইটার ব্যবহারকারীই। পাক মন্ত্রীর এই আচরণকে অক্ষমের কদর্য উল্লাস বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, মহাকাশ গবেষণায় পাকিস্তানের কার্যকলাপের বহর দেখলে বোঝা যাবে যে, এক্ষেত্রে কাজের কাজ কিছুই করতে পারেনি তারা। পাকিস্তানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সুপারকো (স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার রিসার্চ কমিশন) গড়ে উঠেছিল ১৯৬১ তে। এরপর তাদের প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ কক্ষপথে পাঠাতে তাদের লেগে গেল অর্ধ শতাব্দী। তাও আবার চিনের উপগ্রহ উৎক্ষেপন যান ব্যবহার করে এবং চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার অধীনস্থ সংস্থার সহায়তায়।



সুপারকো-র আট বছর পর গড়ে ওঠার পরও ইসরো তার যাত্রাপথে একের পর এক রেকর্ড করেছে। ২০১৭-তে একটি উৎক্ষেপণেই ১০৪ টি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানোর নজির গড়েছে ইসরো। অন্যদিকে, একের পর এক ব্যর্থতা ও ধাক্কায় জর্জরিত হয়েছে পাক মহাকাশ সংস্থা। আট ও নয়ের দশকে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়া-উল-হক যোগাযোগ উপগ্রহ সহ বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আর্থিক বরাদ্দ কমিয়ে দেন। বিজ্ঞানীদের বদলে মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রধান করে দেওয়া হতে থাকে সেনা আধিকারিকদের। সুপারকোর বর্তমান প্রধান কাইজার আনিস খুররমও প্রাক্তন সেনা আধিকারিক। মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত বাজেট বেশি না হলেও, ফাওয়াদের দাবি, ২০২২ সালে প্রথমবার মহাকাশচারী পাঠাবে পাকিস্তান। এই মন্তব্যের জন্য তিনি হাসির খোরাক হচ্ছেন।