নয়াদিল্লি: গত শুক্রবার একটি গ্রহাণু (Asteroid) আবিষ্কার করেন এক মহাকাশ বিজ্ঞানী। তিনি এই গ্রহাণুর নাম দেন ২০২২ ই বি ৫ (2022 EB5)। এর দু’ঘণ্টার মধ্যেই পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে গ্রহাণুটি। সেটি অবশ্য ভূপৃষ্টে আছড়ে পড়ার আগেই বায়ুমণ্ডলে প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। আইসল্য়ান্ডের (Iceland) উপর দিয়ে গ্রহাণুটির পোড়া অংশ চলে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।


আইসল্যান্ডের কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, তাঁরা গ্রিনল্যান্ড (Greenland) ও নরওয়ের (Norway) মাঝামাঝি অংশ দিয়ে আলোর ঝলক দেখতে পান। প্রতি সেকেন্ডে ১১ মাইল গতিতে আলোর বিন্দুটি ছুটে যায়। গ্রহাণুটির অংশ অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোথাও পাওয়া যায়নি। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। তাঁরা প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন।


এখনও পর্যন্ত পাঁচটি গ্রহাণু আবিষ্কৃত হওয়ার পরেই পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে। ২০০৮ সালে প্রথমবার এই ধরনের গ্রহাণু আবিষ্কৃত হয়। এরপর ২০০৮ সালের অক্টোবরে সুদানের নুবিয়ান মরুভূমিতে আছড়ে পড়ে গ্রহাণুটি। সেটির ওজন ছিল ৮০ টন এবং সেটি ছিল ১৩ ফুট চওড়া।


২০১৪ সালে ভেনেজুয়েলার আকাশপথে দেখা যায় একটি গ্রহাণু। ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে আরও একটি গ্রহাণু দেখা যায়। এরপর বৎসোয়ানা ও দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্তে গ্রহাণুর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। ২০১৯-এ আরও একটি গ্রহাণু পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে। এরপর পুয়ের্তো রিকোর দক্ষিণ উপকূলে পাঁচ কিলোটন ওজনের একটি গ্রহাণু আছড়ে পড়ে। তবে তাতে কোনও ক্ষতি হয়নি। এবার আইসল্যান্ডে আছড়ে পড়ল গ্রহাণু।


হাঙ্গেরির মহাকাশ বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ান সার্নেস্কি বুদাপেস্টের একটি মহাকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে গত শুক্রবার গ্রহাণুটি দেখতে পান। তিনি এ বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘এটি একটি ছোটমাপের পাথর ছিল। সেই কারণেই এতদিন কারও চোখে পড়েনি। গ্রহাণুটি সূর্যের সামান্য আলোই প্রতিফলিত করত। তার ফলে চোখে পড়া সহজ ছিল না। গ্রহাণুটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার ফলে কোনও ক্ষতি হয়নি। নরওয়ে ও আইসল্যান্ডের মাঝে সমুদ্রে পড়েছে গ্রহাণুটির ধ্বংসাবশেষ। কিন্তু কয়েকঘণ্টা আগে যদি গ্রহাণুটি রাশিয়ার উপর দিয়ে যেত, তাহলে কী হত, সেটাই ভাবছি। চলতি পরিস্থিতিতে রাশিয়া কি গ্রহাণুটিকে রকেট হিসেবে গণ্য করে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ত?’