গুয়াহাটি: মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে গত আগস্টের শেষে পুলিশ ফাঁড়িতে সন্ত্রাসবাদী হামলার পাল্টা সামরিক অভিযানে সেখানকার ৩ লক্ষের বেশি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম ভিটেছাড়া হয়ে বাংলাদেশে পালিয়েছে। রাখাইন প্রদেশে এই হিংসার শিকার শুধু রোহিঙ্গারাই নন। হিংসার ঘটনায় প্রায় ৮৬ জন হিন্দুও খুন হয়েছেন।  মায়ানমার সেনা ও আরাকান স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)-র সংঘাতের  মাঝে পড়ে ভিটেমাটি ছেড়ে প্রাণের দায়ে পালিয়ে গিয়েছে প্রায় ২০০ হিন্দু পরিবার। মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরনার্থীরা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীরা দাবি করেছেন, মায়ানমার সেনার হামলা থেকে রেহাই পাননি হিন্দুরাও। তাঁদের বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘরছাড়ারা বলছেন, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে শয়ে শয়ে মানুষকে খুন করা হয়েছে।
মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থী কালু সীল বলেছেন, হামলার লক্ষ্য প্রধানত রোহিঙ্গা মুসলিমরাই। কালু সীল আরও বলেছেন, মায়ানমার সেনা ও এআরএসএ তাঁদের গ্রামে হামলা চালায়।  এরপর ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
রমানি ধর নামে এক শরনার্থীকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, মুখোশ পরিহিত একদল লোক তাঁদের গ্রামে হামলা চালায়।
উল্লেখ্য, গত দু সপ্তাহে ৩ লক্ষের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশে রয়েছেন ৪ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনার্থী।
বাংলাদেশের এক আধিকারিক সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, কক্স বাজারের এক হিন্দু গ্রামে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে মোট ৪১৪ জন হিন্দু উদ্বাস্তু আশ্রয় নিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-ক্রিশ্চান ঐক্য পরিষদের সভাপতি রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, হিন্দু শরণার্থীর সংখ্যা ৫১০। মায়ানমারে জাতি সংঘর্ষে ৮৬ জন হিন্দু খুন হওয়ার পর তাঁরা সেখান থেকে পালিয়ে এসে বিভিন্ন হিন্দুদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। হিন্দু উদ্বাস্তুরা জানিয়েছেন, মায়ানমারের মাংডু জেলায় গত ২৭ ও ২৮ আগস্ট মুখোশ পরিহিত একদল লোক তাঁদের বাড়িতে হানা দিয়ে হত্যাকাণ্ড চালায়।
দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, সাধারণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গেই ওই হিন্দু উদ্বাস্তুরা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ পৌঁছেছেন।