ঢাকা: ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্র খুনের ঘটনায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ঢাকায় (Dhaka)। তিন বছর আগে, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি-র ক্যাম্পাসে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে। নেটমাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করায় এক সহপাঠীকে ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়েরই একদল পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। তিন বছর পর, বুধবার সেই মামলায় দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত।
২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি, ৫ পড়ুয়াকে যাবজ্জীবনের সাজাও শুনিয়েছেন ফাস্টট্র্যাক বিচার ট্রাইবুনাল-১-এর বিচারপতি আবু জাফর মহম্মদ কামরুজ্জামান। মোট ২৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন তিনি।  তবে এখনও নিখোঁজ তিন জন। ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা তারা। বাকিরা জেলবন্দি রয়েছে।



আরও পড়ুন : 


বাংলাদেশকে ২০ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে ভারত



২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সাত সকালে ঢাকার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে (University) মৃত্যু হয় আবরার ফাহাদ নামের দ্বিতীয় বর্ষের এক পড়ুয়ার । শাসকদল বাংলাদেশ আওয়ামি লিগ পার্টির ছাত্রদল বাংলাদেশ ছাত্র লিগ (BCL)-এর একদল নেতা-সদস্য তাঁকে ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ ওঠে ।  জানা যায়,  জলবণ্টন চুক্তি স্বক্ষর করায় ফেসবুকে  শেখ হাসিনার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন ফাহাদ।
তাতেই ছাত্রাবাসে তাঁর উপর ফাহাদের উপর চড়াও হয় বিসিএল-এর একদল নেতা-সদস্য। ক্রিকেট খেলার ব্যাট এবং ভোঁতা জিনিস দিয়ে প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে তাঁকে মারধর করা হয়। ভোরের দিকে উদ্ধার হয়  ফাহাদের ক্ষতবিক্ষত নিথর দেহ। তদন্ত শুরু হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরায় বিসিএল নেতা-সদস্যদের সঙ্গে ফাহাদকে ডর্মিটরিতে ঢুকতে দেখা যায়। ঘন্টা ছয়েক পরে সেখান থেকে ফাহাদের দেহ বার করে আনতেও দেখা যায় তাদের।
ভিডিয়োটি নেটমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিসিএল-এর বিরুদ্ধে হিংসা প্রয়োগের আরও অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। সেই সময় দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন দেশের হাসিনা।  তার তিন বছর পর দোষীরা সাজা পেল। বুধবার আদালতের রায় শুনে তাই গলা ধরে আসে ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহের। তিনি বলেন, ‘‘আশাকরি, খুব শীঘ্রই সাজা কার্যকর হবে।’’
তবে বুধবার যে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত, তাদের সকলেরই বয়স ২০ থেকে ২২-এর মধ্যে । তাই আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কিছু মানুষ । যদিও আদালতের দাবি, ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ ঘটনা যাতে আটকানো যায়, তার জন্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়েছে।