পালংখালি: উদ্বাস্তু শিবিরে খাদ্য, স্বাস্থ্যব্যবস্থার ক্ষেত্রে সমস্যা মেটানোর জন্য এবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্মনিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিল বাংলাদেশ সরকার। উদ্বাস্তু শিবিরে থাকা বেশিরভাগ রোহিঙ্গা পুরুষেরই একাধিক স্ত্রী আছে। বেশিরভাগ পরিবারেরই সদস্য সংখ্যা বেশি। অনেক পরিবারে ১৯ জন পর্যন্ত সদস্য আছে। জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের যেমন ধারণা নেই, তেমনই ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে চায় না। কিন্তু রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বেড়েই চলায় সমস্যায় পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। সেই কারণেই জন্মনিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

কক্সবাজারের জন্মনিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান পিন্টুকান্তি ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘গোটা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ই অনেক পিছিয়ে আছে। এর প্রধান কারণ শিক্ষার অভাব। মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের উন্নয়নের জন্য কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। জেলা প্রশাসন গর্ভনিরোধক বিলি করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত শরণার্থীদের মধ্যে মাত্র ৫৪৯ প্যাকেট কন্ডোম বিলি করা সম্ভব হয়েছে। রোহিঙ্গারা কন্ডোম ব্যবহার করতে চাইছেন না। সেই কারণে সরকারকে বন্ধ্যাত্মকরণ প্রক্রিয়া চালু করার আবেদন জানানো হয়েছে। তবে এই কাজ খুব কঠিন।’

জন্মনিয়ন্ত্রণ বিভাগের সদস্যরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ রোহিঙ্গা শরণার্থীই মনে করেন, বড় পরিবার হলে আশ্রয়শিবিরে থাকতে সুবিধা হয়। বাচ্চাদের খাবার, পানীয় জল আনতে পাঠানো যায়। অনেক মহিলার আবার দাবি, জন্মনিয়ন্ত্রণ করা পাপ। সেই কারণেই তাঁরা মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে থাকার সময় সরকারি জন্মনিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে যেতে চাইতেন না। তাঁদের ধারণা, মায়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে যে ওষুধ দেওয়া হত, তাতে তাঁদের বা সন্তানদের ক্ষতি হবে। সাবুরা নামে এক মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর সাতটি সন্তান আছে। তাঁর স্বামী জন্মনিয়ন্ত্রণে রাজি নন।

বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন ধরেই জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া চলছে। এই প্রক্রিয়া সফলও হয়েছে। কক্সবাজারে প্রতি মাসে অন্তত ২৫০ জন বন্ধ্যাত্মকরণ করান। পুরুষরা বন্ধ্যাত্মকরণ করালেই তাঁদের ২,৩০০ টাকা ও লুঙ্গি উপহার দেওয়া হয়। এবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও বন্ধ্যাত্মকরণের বিষয়ে রাজি করানোর চেষ্টা চলছে।