ঢাকা: বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল অব্যাহত রয়েছে। এই সুযোগে গড়ে উঠেছে বিপদাপন্ন শরণার্থীদের ঠকিয়ে নেওয়ার চক্রও। বাংলাদেশ পুলিশ এমনই একটি চক্র ভেস্তে দিয়ে ২০ জন শরণার্থীকে উদ্ধার করেছে। গত কয়েকদিন ধরে তাদের আটকে রেখেছিল ওই চক্রের লোকজন। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান গত সোমবার কক্স বাজারের কাছে সাব্রুংয়ে হানা দিয়ে সাত মহিলা, পাঁচ পুরুষ ও আটজন শিশুকে উদ্ধার করেছে। এ কথা জানিয়েছেন অভিযানের নেতৃত্বে থাকা র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের প্রধান মেজর রাহুল আমিন। তিনি জানিয়েছেন, নৌকার মালিক ও কর্মীদের একটি দল ওই শরণার্থীদের আটকে রেখেছিল। তারা শরণার্থীদের কাছে মায়ানমার থেকে দুই ঘন্টার পথ নৌকায় আসার জন্য প্রতি যাত্রী পিছু ২০ হাজার টাকা (বাংলাদেশি মুদ্রা) ভাড়া চেয়েছিল। মউঙ্গডাউ থেকে বাংলাদেশে শাহ পরীর দ্বীপ পর্যন্ত নৌকা ভাড়া ৪০০ টাকার বেশি নয়।
কিন্তু শরণার্থীদের অসহায় অবস্থার সুযোগে গজিয়ে ওঠা দুষ্কৃতী চক্র ফেঁদে বসেছে সীমাহীন লাভের কারবার।
আমিন জানিয়েছেন, ওই চক্রের তিনজনকে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত আগস্টে রাখাইন প্রদেশে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর থেকে মায়ানমার প্রদেশ থেকে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসেবে প্রায় ৫,০৭,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
অনেকে ছোট নৌকায় নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে আসছে। পুলিশ জানিয়েছে,  নৌকার মালিক, কর্মী ও মত্স্যজীবীরা অনেক বেশি ভাড়া চাইছে। আমিন জানিয়েছেন, শরণার্থীদের পালিয়ে আসার শুরু থেকেই এই ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের অবৈধ মুনাফা রোধের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত গড়ে দোষীদের ছয়মাসের কারাদণ্ডেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।  প্রায় ২০০ জন এই শাস্তি পেয়েছে।
আমিন জানিয়েছেন, তাঁরা উপকূলবর্তী গ্রামগুলিতে হানা চালিয়ে প্রায় ২০ জন দালালকে গ্রেফতার করেছেন এবং ২০০০ জনকে উদ্ধার করেছেন। একটি অভিযানেই এক হাজার রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। তাদের ছয়টি বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল।
এই দুষ্কৃতী চক্র শরণার্থীদের মাঝনদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাদের সর্বস্বান্ত করছে।