ঢাকা: জামাত-ই-ইসলামি প্রধান মতিউর রহমান নিজামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রইল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে মু্ক্তিযু্দ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী নিজামির চূড়ান্ত প্রাণভিক্ষার আর্জি আজ ‘প্রত্যাখ্যাত’ এই একটি মাত্র শব্দ উচ্চারণ করেই খারিজ করে দেয় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের চার সদস্যের বেঞ্চ।


 

৭২ বছরের নিজামি খুন, ধর্ষণ ও বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবীদের সংগঠিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার মতো জঘন্য অপরাধে দোষী ঘোষিত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া আগের রায়টি রিভিউ করে দেখতে তাঁর আর্জির শুনানি-পর্ব দু দিন আগেই শেষ হয়। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ নিজেদের রায়ই রিভিউ করে দেখে।

 

আজ তাঁর রিভিউ পিটিশন প্রত্যাখ্যান হওয়ার ফলে নিজামিকে ফাঁসিতে ঝোলানোয় বাংলাদেশ সরকারের সামনে শেষ বাধাটিও সরে গেল। এখন তাঁর কাছে প্রাণ বাঁচানোর শেষ রাস্তা হল রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাভিক্ষার আর্জি। রাষ্ট্রপতিই একমাত্র নিজামিকে ক্ষমা করে দিয়ে বাঁচাতে পারেন। যদিও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এর আগে নিজামির শীর্ষ সহযোগী সহ ১৯৭১-এর দুজন যুদ্ধাপরাধীর প্রাণভিক্ষার আর্জি নাকচ করে দিয়েছেন। গত বছরই ওই দুজনের প্রাণদণ্ড কার্যকর হয়।

 

নিজামির রিভিউ পিটিশনের কী রায় হয়, সে ব্যাপারে সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনা ছিল বাংলাদেশে। তাঁকে রাখা হয়েছে শহরতলির কাসিমপুর সেন্ট্রাল জেলের মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের নির্ধারিত সেলে।

 

সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায় বেরনোর পর জামাত বিবৃতি দিয়ে নিজামিকে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রে শিকার বলে উল্লেখ করে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তের নামে মৌলানা নিজামিকে খুনের পরিকল্পনা করেছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনের বিরোধিতা করে পাক সেনাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশবাসীর ওপর অত্যাচার করেছিল জামাত। সে সময় নিজামি ছিলেন জামাতের ছাত্র শাখা তথা কুখ্যাত আল বদর বাহিনীর প্রধান। এমনকী পরে বাংলাদেশে বিএনপি নেতৃ্ত্বাধীন চার দলের জোট সরকারের মন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনি।