দুবাই: ঔদ্ধত্য ও নিচ মানসিকতাকে তীব্র ধিক্কার! গয়নাগাঁটির দোকানের দিকে চোখ চলে গিয়েছিল এক সাফাই কর্মীর। সেই অবস্থায় তাঁর একটা ছবি কেউ তুলে নিয়েছিল। সেই ছবি ইন্সস্টাগ্রামে কোনও এক ব্যক্তি আপলোড করেন। সঙ্গে তীর্যক কটাক্ষ- ‘এই লোকটার তো জঞ্জালের দিকেই তাকিয়ে থাকা উচিত’।


এ ধরনের নির্মম পরিহাসের যোগ্য জবাব ওই ব্যক্তি পেয়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার সৌদি আরবের ওই বাংলাদেশি সাফাইকর্মীর প্রতি সহমর্মিতার ঝড় উঠেছে। রিয়াধে সাফাইকর্মী হিসেবে কর্মরত ওই সাফাইকর্মীকে উপহার দিতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে।

ইন্সস্টাগ্রামে সেই বিকৃত মনোভাবাপন্ন ব্যক্তির পোস্ট দেখার পর ইনসানিয়ত্ (মানবিকতা) নামে ট্যুইটার অ্যাকাউন্টের গ্রাহক আবদুল্লা আল কাহাত্নি ছবির ওই সাফাইকর্মীকে খুঁজে বের করার জন্য একটি অভিযান শুরু করেন। সেই অভিযানে সাফল্যও পাওয়া যায়। জানা যায়, ওই সাফাইকর্মীর নাম নজরুল আব্দুলকরিম। তার মাসিক বেতন ১৮৭ মার্কিন ডলার (৭০০ সৌদি রিয়াল)। নজরুলকে খুঁজে পেয়েই তাঁর হাতে উপহার তুলে দেন আবদুল্লা।তিনি জানিয়েছেন, নজরুলের কাছে আরও অনেক অর্থ পাঠানো হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই নজরুল সোনার গয়না, কয়েক বস্তা চাল, মধু উপহার হিসেবে পেয়েছেন। এছাড়াও দেশে যাতায়াতের জন্য বিমানের টিকিট, একটি আইফোন ৭ ও একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোনও পেয়েছেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌদিরা ট্যুইট করে নজরুলকে আরও বেশি উপহার পাঠানোর কথা জানাচ্ছেন। একজন তো ৫০০ মার্কিন ডলার উপহার দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

এত উপহার পেয়ে অভিভূত নজরুল।

আবদুল্লা বলেছেন, নজরুল খুবই পরিশ্রমী। কাজের শেষে তিনি রাস্তার আশ্রয়হীন বিড়ালছানাদেরও দোখাশোনা করেন।

সোনার গয়নার দিকে নজরুলের তাকিয়ে থাকার ছবি দেখার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর প্রতি সহমর্মিতা ঝরে পড়ছে। অনেকেই চাইছেন, সাফাই কর্মী সোনার দোকানে গিয়ে গয়না কিনুন। তারপর একটা অ্যাকাউন্টে হয়ত ছবি দেখা যাবে, সাফাইকর্মী হাতে সোনর গয়না নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

তাঁরা মনে করছেন, এভাবেই অপমানজনক বিদ্রুপের মুখের মতো জবাব দেওয়া যাবে।