ঢাকা: ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের পাশে দাঁড়িয়ে গ্রামে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ৫ কট্টর ইসলামি মৌলবাদীকে মৃত্যুদণ্ড দিল বাংলাদেশের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পটুয়াখালির ইটাবারিয়া গ্রামে অন্তত ১৫ জন মহিলাকে ধর্ষণের দায়ে ফাঁসির সাজা দিয়েছে ৫ জনকে। পাশাপাশি ওই গ্রামেরই ১৭ জনের হত্যাকাণ্ড, ভাঙচুর, গুন্ডামি, অপহরণ, জোর করে আটকে রাখা, নির্যাতনের মতো অপরাধেও তাদের চরম সাজা হয়েছে।
দোষীরা ধর্ষণকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিল, ওদের হাতে ধর্ষিতারা বাকি জীবনটা অত্যাচারের যন্ত্রণা, ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছেন বলে অভিমত জানিয়েছেন বিচারপতিরা। ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছে, এই মহিলারা হলেন আমাদের মুক্তিযু্দ্ধের সত্যিকারের নায়ক। ওঁদের স্বীকৃতি দেওয়ার সময় হয়েছে।
রায় ঘোষণা করে আদালত বলেছে, মহম্মদ ইশাক শিকদার, আবদুল গণি ওরফে গণি হাওলাদার, মহম্মদ আওয়াল, মহম্মদ এ সাত্তার পাড়া ও সোলেইমান মৃধা ওরফে সোলেমান মৃধা-এই ৫ অপরাধীকে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার সময় অপরাধীরা আদালতে উপস্থিত ছিল।
সরকারপক্ষের বক্তব্য, দোষীরা ছিল ১৯৭১-এ পাকিস্তানি সেনার সহযোগী কুখ্যাত রাজাকার বাহিনীর সদস্য। যদিও ২০১৫ য় যখন তাদের গ্রেফতারির সময় তারা খালেদা জিয়ার দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনপি) স্থানীয় শাখার সঙ্গে যুক্ত ছিল।
তবে আইনি ধারা অনুসারে এই দোষীরা ট্রাইবুন্যালের রায়কে শুধুমাত্র সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপেলেট শাখায় চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে।
২০১০-এ দেরিতে হলেও ১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় বাংলাদেশে। সেই থেকে ট্রাইব্যুনাল এপর্যন্ত ৬ জন দোষীর ফাঁসির সাজা কার্যকর করেছে। এদের ৫ জন মৌলবাদী জামাত-ই-ইসলামির লোক, বাকি ১ জন বিএনপি-র।