সম্প্রতি, বন্যার তোড়ে ব্রহ্মপুত্র নদে প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার ভেসে অসম থেকে বাংলাদেশে চলে যায় পূর্ণবয়স্ক ভারতীয় হাতি ‘বঙ্গবাহাদুর’। সেখানে তার মৃত্যু হয়। অভিযোগ, অতিরিক্ত ট্র্যাঙ্কুলাইজার (ঘুম-পাড়ানোর ওষুধ) ব্যবহার করাতেই মৃত্যু হয়েছে হাতিটির।
এই প্রেক্ষিতে ইউনুস আলি নামের বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী ঢাকা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। সেখানে তিনি জানান, হাতির মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তাদের থেকে যেন ১ কোটি বাংলাদেশি টাকা ক্ষতিপুরণ আদায় করতে বাংলাদেশ সরকারকে নির্দেশ দিক আদালত। পাশাপাশি, এই ঘটনায় একটি বিচারবিভাগীয় তদন্ত গঠন করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হোক বলেও নিজের আবেদনে জানান ইউনুস।
নিজের আবেদনে ওই আইনজীবী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ রক্ষা করা সরকারের কর্তব্য। কিন্তু হাতিটিকে বাঁচাতে না পেরে এক্ষেত্রে নিজের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এপ্রসঙ্গে, তিনি বাংলাদেশ প্রশাসনকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করান।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে জামালপুর জেলায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ‘বঙ্গবাহাদুর’। জানা যায়, অসমে বন্যার কারণে গত ২৭ জুন নিজের পাল থেকে আলাদা হয়ে পড়ে সে। এরপর ক্ষরাস্রোত ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসতে ভাসতে প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছয় ‘বঙ্গবাহাদুর’।
পথে, বেশ কয়েকটি জলাভূমিতে ওঠার চেষ্টা করে ‘বঙ্গবাহাদুর’। কিন্তু, সেখানে আগে থেকেই বন্যা-কবলিত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁরা হাতিটিকে তাড়িয়ে দেন। বাধ্য হয় বনকর্মীরা ‘বঙ্গবাহাদুর’-কে চারবার ট্র্যাঙ্কুলাইজার ডার্ট দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সম্ভবত অধিকমাত্রায় ঘুম পাড়ানোর ওষুধ দেওয়ার ফলেই হাতিটির মৃত্যু হয়।
গত মঙ্গলবার, পরিবেশমন্ত্রকের নির্দেশিকানুসারে এই ঘটনার তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশের বন-দফতর।