রিও দি জেনিরো: মাদক বিরোধী অভিযানে ধুন্ধুমার। মাদক পাচারকারী ও পুলিশের মধ্যে গুলি বিনিময়ে নিহত এক পুলিশকর্মী সহ ২৫। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাজিলের রাজধানী রিও দি জেনিরোতে।
রিও-র জাকারেজিনহো বস্তিতে বৃহস্পতিবার ওই অভিযান চালায় পুলিশ। আর্মার্ড ভেহিকল করে সশস্ত্র পুলিশ সেখানে হানা দেয়। আকাশে চক্কর কাটতে থাকে পুলিশের হেলিকপ্টার।
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পুলিশ আসতেই সেখানকার বাসিন্দারা এক ছাদ থেকে আরেকটি ছাদে লাফ দিয়ে পালাচ্ছে। পুলিশ ও মাদর পাচারকারীদের মধ্যে তীব্র গুলি বিনিময় হয়। ভয়ে মানুষ ঘরের মধ্যে লুকিয়ে পড়েন।
সম্প্রতি, ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, অতিমারীর সময় যথাসম্ভব এই অভিযান এড়িয়ে চলতে। একেবারে প্রয়োজন ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও মাদক-বিরোধী অভিযানের প্রয়োজন নেই।
তা সত্ত্বেও, রিও পুলিশ বৃহস্পতিবার এই অভিযান চালায়। পুলিশের এই অভিযানের তীব্র সমালোচনা করেছে অ্যামনেস্টি সহ বিভিন্ন মানবাধিকার ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
পুলিশের এই অভিযানকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিভিন্ন মহলের তরফে। পরিসংখ্যান বলছে, রিও-তে বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে ২০২০ সালে ১,২৩৯ জন পুলিশের হাতে নিহত হয়েছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়, এদিনের অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল নাবালকদের ধমকে-চমকে দলে যোগ দেওয়ানো থেকে মাদকপাচারকারীদের রোখা। এক মুখপাত্র বলেন, আমরা সেখানে গিয়েছিলাম ওই মানুষগুলিকে আশ্বাস দিতে, যারা পাচারকারীদের সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের অভিযানে অংশ নিয়েছিল প্রায় ২০০ জন অফিসার। তার আগে, বিগত কয়েকমাস ধরে তদন্ত চলেছে। অভিযান থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০টি বন্দুক ও প্রচুর পরিমাণ মাদক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানে নিহতদের মধ্যে ২৪ জন দাগী অপরাধী। তারা পুলিশ অফিসারকে হত্যা করার চেষ্টা করে। যদিও, পুলিশ এদিন তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ পেশ করেনি।
পুলিশের এই অভিযানকে তীব্র সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। এর আগে, ২০০৫ সালে বাইশাদা বস্তিতে পুলিশি অভিযানে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০০৭ সালে আরেকটি অভিযানে মারা গিয়েছিল ১৯ জন।
পুলিশের দাবি, মন্ত্রককে এই অভিযান সম্পর্কে আগেই অবগত করা হয়েছিল। যদিও মন্ত্রকের দাবি, অভিযান শুরু হওয়ার পর তারা জানতে পারে।